আফতাবের পর এবার নতুন কাউন্সিলর সাঈদও কারাগারে

সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের ৭ নং ওয়ার্ডের বর্তমান আলোচিত কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের পর এবার কারাগারে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সায়ীদ মো. আবদুল্লাহ।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কিউ এম নাসির উদ্দিন সায়ীদ আব্দুল্লাহকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এর পক্ষে থাকা আইনজীবী মো. নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সোমবার (২৪ জুলাই) নির্বাচনকালীন সময়ে অস্ত্রের মহড়ার অভিযোগে আফতাবের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণ করেন সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেন।

কাউন্সিলর আফতাব উদ্দিন খানের আইনজীবী মো. আব্দুর রহমান আফজাল জানান, দ্রুত বিচার আইনের ৪/৫ ধারার মামলায় সাঈদ আব্দুল্লাহসহ ১১ জন উচ্চ আদালত থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ডাইরেকশনে ছিলেন। আদেশ মোতাবেক আসামীরা সিলেট মহানগর দায়রা জজের আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ পূর্বক জামিনের আবেদন করলে, আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

তিনি আরও জানান, সায়ীদ আব্দুল্লাহসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে জামিন বাতিলের শুনানীতে তিনি এবং আইনজীবী এ এইচ এম ওয়াসিম, আশিষ দে উপস্থিত ছিলেন।

সায়ীদ আবদুল্লাহ ছাড়াও একই মামলায় যাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে তারা হলেন- ছবের মিয়া, আকলিছ মিয়া, এমাদ উদ্দিন সুয়েব, আমিন মিয়া, আল-আমিন, কাজী মিজান, মো. মোবারক হোসাইন, জীবন, ফরিদ মিয়া, রাজন আহমদ। এরা সবাই ৭ নং ওয়ার্ডের বনকলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

এর আগে গত ১১জুন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর কর্মীকে মারধরের অভিযোগে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে বিমান বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৭ নং ওয়ার্ডে লাটিম প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী সায়ীদ মো. আবদুল্লাহসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলায় যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন- নগরীর বনকলাপাড়া এলাকার সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহ (৩৬), কাজী মিজান (২৯), শাহীন (৩০) রাজন আহমদ, ছবের মিয়া (৩৪), এমাদ উদ্দিন সুয়েব (৩৩), মতিউর রহমান মৃধা (৪২), আমিন মিয়া (৩২), আল আমিন (২৮), পশ্চিম পীর মহল্লার আবুল কালাম মাস্টার (৪৫), জুনেদ আহমদ (৩৫) ও অগ্রণী আ/এ এলাকার সোহাগ মিয়া (২৬)।

এদিকে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাসার সামনে অস্ত্রের মহড়া দেয়ার অভিযোগে সোমবার (২৪ জুলাই) কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার দুপুরে তিনি জামিন প্রার্থনা করলে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

গত ৬ জুন সাঈদ মো. আবদুল্লাহ’র বাসার সামনে ৭-৮টি মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকজন যুবক মহড়া দেয়। এসময় মোটরসাইকেল থেকে এক যুবক ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাঈদ মো. আবদুল্লাহ’র বাসার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে ভীতি প্রদর্শন করে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে মহড়ায় অংশ নেওয়া যুবকদের সাথে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খানও ছিলেন। এ ঘটনায় নগরীর বিমানবন্দর থানায় আফতাব হোসেন খানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন সায়ীদ আবদুল্লাহ। সেসময় অস্ত্রসহ মহড়ার ঘটনায় সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আফতাবের প্রার্থীতাও বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। পরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন মো. সায়ীদ আব্দুল্লাহ।

এদিকে আফতাব হোসেন ছাড়াও এ মামলায় এখন পর্যন্ত আরও দুইজন গ্রেফতার হয়েছেন। তবে সেই অস্ত্র এখনও উদ্ধার করা যায়নি।