অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৩৪ রানের বিশাল জয় পেয়েছে সাউথ আফ্রিকা। টানা বিশাল দুই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে প্রোটিয়ারা। একই সাথে টানা দুই পরাজয়ে অজিদের অবস্থান পয়েন্ট টেবিলের আটে।
এর আগে ডি ককের সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বাকি কাজটা সেরেছেন বোলাররা। বিশেষ করে পেসাররা। কাগিসো রাবাদা-লুঙি এনগিদি মিলে ভেঙে দিয়েছেন অজি টপ অর্ডার। মিডল অর্ডারে মার্নাস ল্যাবুশেন একাই খানিকটা লড়াই করলেও তা কেবলই হারের ব্যবধান কমিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) লক্ষ্ণৌতে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩১১ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০৯ রান করেছেন ডি কক। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি করতে উইকেট শিকার করেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মিচেল স্টার্ক। জবাবে খেলতে নেমে ৪০ ওভার ৫ বলে ১৭৭ রানে অলআউট হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
৩১২ রানের লক্ষ্যে অজিদের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে আসেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। শুরু থেকেই ভুগতে থাকা ওপেনিং জুটি ভাঙে মিচেল মার্শের (৭) বিদায়ে। ২৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। মার্শের পথ ধরে আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারও দ্রুতই ফিরে যান সাজঘরে। ২৭ বলে ১৩ রান করেন তিনি।
দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে লাবুশানের সঙ্গে জুটি গড়েন স্টিভেন স্মিথ। কিন্তু স্মিথ ১৬ বলে ১৯ রানে রাবাদার শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। স্মিথের বিদায়ের পর জশ ইংলিশও বেশি সময় থাকতে পারেননি ক্রিজে। রাবাদার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৪ বলে ৫ রান করে তিনিও ফিরে যান। দলীয় ৬৫ রানে কেশব মহারাজের ঘূর্ণিতে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বিদায়ে বেশ বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। স্কোরকার্ডে ৫ রান যোগ হতেই রাবাদায় ফেরেন স্টয়নিস।
৭০ রান তুলতেই একে একে সাজঘরে অস্ট্রেলিয়ার ৬ ব্যাটার। তবে এরপর মিচেল স্টার্ককে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেন ল্যাবুশেন। তবে ২৭ রান করে স্টার্ক ফিরলে আর কেউই ল্যাবশেনকে সঙ্গ দিতে পারেননি। বাকি ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মধ্যেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন ল্যাবুশেন। ৪৬ রান করা এই ব্যাটার সাজঘরে ফিরলে আর বেশিক্ষণ টিকেনি অজিদের ইনিংস। প্রোটিয়াদের হয়ে ৩ উইকেট পেয়েছেন রাবাদা।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করেন ডি কক। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন বাভুমা। দুজনে মিলে গড়েন ১০৮ রানের অপেনিং জুটি। ৫৫ বলে ২ বাউন্ডারিতে বাভুমা ৩৫ রান করে ফিরলেও টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান ডি কক।
৫১ বলে ফিফটি পূর্ণ করা এই উইকেটকিপার ব্যাটার পরের ৫০ রান করতে খেলেছেন মাত্র ৩৯ বল। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৪৭ ম্যাচে এটি তার ১৯তম সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরি তুলে নিজের ইনিংস বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি ডি কক। থেমেছেন ১০৯ রানে।
ডি ককের বিদায়ের পর ক্লাসেনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মার্করাম। এর মাঝেই মার্করাম তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। ৪১ বলে ৫০ রান করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে ৬টি চারের মার ও ১টি ছয়ের মার। অর্ধশতকের পর প্যাট কামিন্সের শিকার হয়ে ৪৪ বলে ৫৬ করে ফিরেন মার্করাম। তার বিদায়ের পর রানের গতি কিছুটা হলেও মন্থর হয়ে যায়।
একটা সময় মনে হচ্ছিল তিনশ’ রান করতে পারবে না প্রোটিয়ারা। ক্লাসেন ২৭ বলে ২৯ রান করে সাজঘরে ফেরার পর শেষ দিকে মার্কো জানসেনের ২২ বলে ২৬ রান ও ডেভিড মিলারের ১৭ রানে ভর করে ৭ উইকেটে ৩১১ রান তুলে ইনিংস শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ২ উইকেট নেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২টি উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক, ১টি করে উইকেট নেন জশ হ্যাজেলউড, প্যাট কামিন্স ও অ্যাডাম জাম্পা।