হবিগঞ্জ শহরে দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এনেসথেসিয়ার ডাক্তার ছাড়াই অপারেশন চলছিল। এসময় প্রশাসনের অভিযান পরিচালিত হওয়ার খবর পেয়ে অপারেশন থিয়েটারে রোগী রেখে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাসমিরা জাহান ও ডা. জাহিদুর রহমান নামে দুই চিকিৎসক পালিয়ে যান। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই হাসপাতালের মালিক মো. আরিফুল ইসলামকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের পৌর বাস টার্মিনাল এলাকার ওই হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ জহুরুল হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নুরুল হক ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহায়তা করেন এবং বাদী হয়ে হাসপাতালের মালিক ও কর্মকর্তাদের নামে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নুরুল হক জানান, নিজস্ব ডাক্তার-নার্স ও লাইসেন্স নবায়ন না থাকাসহ কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে সিভিল সার্জন দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটালে যান। তখন হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে একটি সিজার মাত্র শেষ হয়। সেখানে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. উম্মে কাসমিরা ছিলেন। আর ওই রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত ফাইলে ডা. জাহিদুর রহমানের নাম দেখতে পেলেও তিনি সেখানে ছিলেন না। এছাড়াও অপারেশনের জন্য এনেসথেসিয়ার কোনো ডাক্তারের নাম পাননি। এরপর সিভিল সার্জন প্রশাসনকে জানালে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এই ফাঁকে ডা. উম্মে কাসমিরা জাহান হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
সিভিল সার্জন ডা. নুরুল হক বলেন, আমি হাসপাতালের অপারেশনে গিয়ে ডা. উম্মে কাসমিরা জাহানকে পাই। তিনি অভিযান টের পেয়ে অপারেশন শেষ হওয়ামাত্রই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। কিন্তু অপারেশন পরবর্তী সময়ে ডাক্তারের কিছু কাজ থাকে। কিন্তু তিনি তার আগেই হাসপাতাল ত্যাগ করেন। আর ফাইলে ডা. জাহিদুর রহমানের নাম উল্লেখ থাকলেও তাকে পাইনি। রোগীর অপারেশন করার জন্য এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও ছিল না। এতে বোঝা যায়, ওই হাসপাতালে এনেসথেসিয়া ও অপারেশন পরবর্তী বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাজগুলো আসলে আয়া বা হাসপাতালের স্টাফরাই করে থাকেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, হবিগঞ্জ পৌর বাস টার্মিনাল সংলগ্ন দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটালে নিয়মিত চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ছিল না। এছাড়াও রোগীদের ভুল চিকিৎসাসহ নানা ধরনের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে হাসপাতালের মালিক মো. আরিফুল ইসলামকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।