একের পর এক অভিযোগ সিলেট দক্ষিণ সুরমা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তবে নিজের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ থাকলেও এতে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন শামসুল ইসলাম। উল্টো অবসরের পর কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের নামে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন তিনি।
এরমধ্যে গত ৭ জুন নিজের কর্মকালীন সময়ের বিভিন্ন কাগজপত্রাদি সরিয়ে ফেলতে পারেন এমন আশঙ্কা থেকে কলেজের ৫ শিক্ষকের নামে দক্ষিণ সুরমা থানায় জিডি করেন সাবেক অধ্যক্ষ শামসুল ইসলাম। অভিযোগে সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, প্রভাষক সাব্বির রহমান, পরিদর্শক নাজনীন খান ইভা, প্রভাষক মতি লাল ও প্রভাষক মুহিবুর রহমানকে দায়ী করেন তিনি।
জিডির তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পুলিশ এই অভিযোগের সপক্ষে কোনো তথ্য প্রমাণ পায় নি।
তবে এতে খুব একটা দমার পাত্র নন শামসুল ইসলাম। একই রকম লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। যা এখন তদন্তনাধীন। তবে আশ্চর্যজনকভাবে মন্ত্রণালয়ে করা আবেদনে মতি লাল ও মুহিবুর রহমানের নামোল্লেখ করেন নি।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে শামসুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার আশঙ্কা ছিলো এরা কাগজপত্র সরিয়ে ফেলতে পারে, তাই জিডি করেছি। এছাড়া আমি জিডি করার কয়েকদিন পরই ‘কিছু কাগজপত্র খোয়া গেছে’ মর্মে কলেজ কর্তৃপক্ষও জিডি করেছে, তার মানে আমার আশঙ্কা সত্য।
তবে জিডির পর পুলিশের দাখিলকৃত প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়া যায় নি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ কিভাবে এরকম প্রতিবেদন দিলো তা আমার জানা নেই। তবে এখনো মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি চলছে, আমার অভিযোগের স্বপক্ষে কাগজপত্র চেয়েছিলেন, আমি তা দাখিল করেছি।’
মন্ত্রণালয়ে অভিযোগের ক্ষেত্রে দুই জনের নাম বাদ দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই দুজন আসলে ওদের পরামর্শক, মূল কারিগর ওরা তিনজন। তাই এদের নাম আর দেই নি।
এদিকে দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের বিভিন্ন কাগজপত্র খোয়া যাওয়ার ব্যাপারে জিডি করেছিলেন কলেজটির হিসাবরক্ষক মন্তাজ আলী। তবে এই জিডির ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষকে কিছুই জানানো হয় নি বলে জানিয়েছেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।
তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সাধারণত কোনো কাগজ খোয়া গেলে আগে আমাকে জানানোর কথা। আমাকে এমন কিছুই জান নি। তাছাড়া প্রতিষ্ঠান প্রধানের লিখিত অনুমতি ছাড়া উনি জিডি করলেন কিভাবে সেটাও বোধগম্য নয়।’
আর জিডি করা কলেজের হিসাব রক্ষক মন্তাজ আলী মৌখিকভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জানিয়েছেন বলে জানান, ‘আর লিখিত অনুমতি নেবার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা করেন নি বলে স্বীকার করেন। তবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জানানো হয় নি বলে জানালে তিনি বলেন, জিডি যেদিন করেছি সেদিন রাতে জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, বন্যার সময় কলেজে পানি উঠে গিয়েছিলো, তাই অনেক কাগজপত্র সরানোর কারণে কিছু খোয়া গেছে। যার মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন কাগজ থাকায় তার নকল তুলতে গেলে জিডি করতে হতো। তবে কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিত ছিলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তবে এরমধ্যে সাবেক অধ্যক্ষের কোনো কাগজ ছিলো কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেন নি মন্তাজ আলী।