বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকার সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করেছেন। ক্ষমতায় যাওয়ার আগে সাধারণ মানুষকে কথা দিয়ে ছিল ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে, বিনামূল্যে সার দিবে। আজ চাল ও সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন করতে গিয়ে অসংখ্য নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছেন, অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতে একজন নিহত হয়েছেন, অবিলম্বে হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ইনশাআল্লাহ অতিশীঘ্রই আওয়ামী লীগের পতন হবে।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট মহানগর বিএনপির উদ্যোগে র্যালি পরবর্তী আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নগরীর রেজিষ্ট্রারী মাঠ থেকে শুরু হওয়া র্যালিটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকীর সভাপতিত্বে, সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী ও যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের শামীম, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, সরকার দাবি করে দেশে গণতন্ত্র আছে। আমি যদি তর্কের খাতিরে ধরেই নিই দেশে গণতন্ত্র আছে, তাহলে প্রশ্ন করি, এত ভয় কেন? বিরোধী দল বিক্ষোভ কর্মসূচি করছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছে, মিছিল করছে। সেটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সেই টুকু সহ্য করার সাহস ও মুরোদ যদি না থাকে, রাজনীতি ছেড়ে দেন। পুলিশ প্রশাসন দিয়ে আর কয় দিন রাজনীতি করবেন? বিরোধী দলকে দমন করে আর কয় দিন রাজনীতি করবেন?
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, হত্যা ও দমনপীড়নে বিএনপিকে দমানো যাবে না। এতো গুলি, এতো হত্যা এতো নির্যাতন এতো নিপীড়ন, এত গুম খুনের পরও বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। বিএনপি সেই ফিনিক্স পাখির মত ধ্বংসাবশেষ থেকে জেগে উঠছে। এটাই হচ্ছে শাসক গোষ্ঠীর সবচেয়ে ভয়ের কারণ। সরকার যদি মনে করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের কায়দায় খেলা হবে বলে অন্ধকারে কিংবা খেলা হবে বলে আবারো দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করবে, তাহলে ভুল করবে। দেশের মানুষ আর কোন প্রহশনের নির্বাচনে অংশ নেবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপির প্রতিষ্ঠা করা গণতন্ত্রকে নষ্ট করছে দিয়েছে, সাধারণ মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করেছে, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি করে দেশের সাধারণ মানুষকে অসহায় করে তুলেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা এখন আবুল তাবুল বকছে, আওয়ামী লীগ এখন আইসিইউতে আছে, এখন তাদের বিদায়ের পালা। বিএনপি রাস্তায় নামছে, আওয়ামী লীগের পতন অনিবার্য।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকী বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাকশাল থেকে বহু দলীয় গণতন্ত্র দেশে প্রতিষ্ঠা করেছেন। সকল সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি গ্রাম সরকার করে গ্রাম থেকে উন্নয়ন শুরু করেছেন।
এসময় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন- সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমাইয়ুন কবির শাহীন, ফরহাদ চৌধুরী শামীম, জিয়াউল গনি আরেফিন জিল্লুর, এডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন, সুদিপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, এডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ, নজিবুর রহমান নজিব, সৈয়দ মঈন উদ্দিন সুহেল, সালেহ আহমদ খছরু।
এছাড়ও সিলেট মহানগর বিএনপির ওয়ার্ড সমূহের আহ্বায়ক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নগরীর রেজিষ্ট্রারী মাঠে নারায়নগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি চলাকালে অতর্কিত হামলায় নিহত যুবদল নেতা রাজ আহমেদ শাওনের গায়েবানা জানাজা আদায় করা হয়। এর পর কালো ব্যাজ ধারণ করে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে র্যালির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন নেতৃবৃন্দ।