হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় প্রতিবছর শীত একটু ভিন্নভাবে নামে। এতে যেমন শীত উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা পাহাড়-দিঘির এ জনপদে ছুটে আসেন, তেমনি অতিথি পাখির আনাগোনায় তাদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয় উপজেলার গোগাউড়া দিঘি, পরীবিল দিঘি, দেওন্দি বিল আর রেমা-কালেঙ্গা পাহাড়ে বেষ্টিত পুকুরগুলো।
শীতজুড়ে অতিথি পাখির আগমনে পুকুরের সৌন্দর্যে এক বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে। আর পাখিদের দুরন্তপনা উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে পুকুরপাড়ে ছুটে আসছেন পর্যটক ও প্রকৃতিপ্রেমীরা।
উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের পাশেই গোগাউড়া দিঘি। পৌর এলাকার বাজারে অবস্থিত পুরাতন খোয়াই নদী, চান্দুপুর চা-বাগানের ভেতরে পরীবিল। দিঘি আর পুকুরের পানিতে পানকৌড়ি, পাতিহাঁসসহ নানা প্রজাতির পাখির আগমনে সৌন্দর্য আরও ফুটে উঠেছে। দিনের বাকি অংশ পাখিদের আনাগোনা কম থাকলেও সকালে তাদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের অংশ শকুনসহ শীতে হাজারও পাখির আনাগোনা শুরু হয় এ জনপদে। আর এতে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে পুকুরপাড় এলাকা।
স্থানীয়রা আমার জানান, শীতের এই সময়ে অতিথি পাখির আগমন ঘটে থাকে। গতবারের তুলনায় এবার বেশি অতিথি পাখি দেখা যাচ্ছে। আর পাখির আগমনে জায়গাটির সৌন্দর্য আরও বেড়ে গেছে।
পরিবারসহ বেড়াতে আসা এক পর্যটক বলেন, পথিমধ্যে পুকুরে অনেক অতিথি পাখি দেখে আমরা এখানে দাঁড়াই। অপরূপ সুন্দর লাগছে পাখির অবাধ বিচরণ দেখে। ভ্রমণের শুরুতেই মনোমুগ্ধকর এই পরিবেশ উপভোগ করতে পেরে খুশি পরিবারের সবাই। পাশাপাশি চা-বাগানের বন-পাহাড়ের বেষ্টনি দারুণ উপভোগ্য।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, এই এলাকার দর্শনীয় স্থান দিঘি ও পুকুর। পুকুরপাড়ে আমরা প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় অবসর সময় অতিবাহিত করি। এখানকার পুকুরগুলোতে শীতের সময় প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটে। আর তা দেখতে ও মোবাইলে ধারণ করে রাখতে অনেক ভালো লাগে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, অতিথি পাখির আগমনে যেন কোনো বাধা সৃষ্টি না হয়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ অসৎ পাখি শিকারিরা সবসময় ওৎ পেতে থাকে।
স্থানীয়রা বলেন, পাখি মেরে ফেলা কিংবা যাতে তাড়িয়ে দেয়া না হয়, সে বিষয়ে এলাকার সবাইকে সচেতন করা জরুরি। সকলেই সবসময় নজরদারির মধ্যে রাখলে পাখির আনাগোনা আরও বৃদ্ধি পাবে।