সিলেটে চা-শ্রমিকদের দেওয়া কথা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সিলেটে এসেছে চা-শ্রমিকদের জন্য উপহারের অ্যাম্বুলেন্স।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সিলেটের লাক্কাতুরা চা-বাগান এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করবে জেলা প্রশাসন।
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর লাক্কাতুরা চা-বাগান এলাকার গলফ মাঠে চা-শ্রমিকরা ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময়কালে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকের ব্যবস্থা করে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন দাবি জানান।
অ্যাম্বুলেন্স আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আহসানুল আলম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চা-শ্রমিকদের জন্য উপহার হিসেবে একটি অ্যাম্বুলেন্স সিলেটে পাঠিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় অ্যাম্বুলেন্সটি শ্রমিকদের জন্য লাক্কাতুরা চা-বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
চা-শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে চা-শ্রমিকরা খুবই আনন্দিত। এখন বাগানের কোনও শ্রমিক অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া যাবে। এই প্রথম কোনও চা-বাগানে দেওয়া হলো অ্যাম্বুলেন্স। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় লাক্কাতুরা চা-বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করা হবে।
এমবিবিএস চিকিৎসক দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে যোগাযোগ করেছিলাম। আমাদেরকে বলা হয়েছে চিকিৎসকের বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওই দিন ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়কালে নারীদের পক্ষ থেকে চা-শ্রমিক শ্যামলী গোয়ালা বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি ছাড়া আমাদের কেউ নেই। আপনি আমাদের পিতা-মাতা। আমরা যখন আন্দোলন শুরু করি তখন আমাদের একটাই চাওয়া ছিল, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটিবার কথা বলবো। সেসময়ে আপনি নিজ থেকে আমাদের হয়ে কথা বলেন এবং মজুরি বাড়িয়ে দেন। এজন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
ওই সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আরও বলেছিলেন, আমরা চিকিৎসাসহ নানা ভোগান্তিতে রয়েছি। অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাবো সে ব্যবস্থা নেই। আমাদের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিন। সেইসঙ্গে চা-শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য বাগানে একজন এমবিবিএস চিকিৎসকের ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি। এছাড়া তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটি চার মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করার দাবি জানান।
তাদের বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী চা-শ্রমিকদের শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানসহ নাগরিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রী চা-শ্রমিকদের বক্তব্য শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমার তো বাবা-মা কেউ নেই, আপনারাই আমার সব।’