সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে পর্তুগাল। ম্যাচের নায়ক হ্যাটট্রিক হিরো গঞ্জালো রামোস।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রথমবারের মতো শুরুর একাদশে নেমে অসাধারণ পারফরম্যান্স উপহার দিলেন গনসালো রামোস। হ্যাটট্রিক করার পাশাপাশি সতীর্থের গোলেও অবদান রাখলেন এই তরুণ।
কাতার বিশ্বকাপে লুসাইল স্টেডিয়ামে পর্তুগাল ঝড়ের সামনে কোনও প্রতিরোধই গড়তে পারেনি সুইজারল্যান্ড। আসরে প্রথম দুই ম্যাচে একেবারে শেষদিকে রোনালদোর বদলি হিসেবে নামার সুযোগ পান গঞ্জালো রামোস। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে রোনালদোকে ছাড়াই একাদশ সাজান পর্তুগালের কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। দলের সেরা তারকার জায়গায় এবার তাকে শুরুর একাদশে রাখেন কোচ। আর সুযোগের পুরোটাই কাজে লাগালেন রামোস।
খেলার ১৭ মিনিটে প্রথম গোল পায় পর্তুগাল। থ্রো থেকে বক্সের মধ্যে রামোসকে পাস দেন হোয়াও ফেলিক্স। প্রথম পোস্টে থাকা গোলরক্ষকের পাস দিয়ে জোরালো শটে গোল করেন রামোস। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন গোলরক্ষক। রোনালদোর বদলে প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েই গোল করেন তিনি।
৩৩ মিনিটে লিড ডাবল করেন পেপে। কর্নার থেকে জোরালো হেডে বল জালে জড়িয়ে দিলেন তিনি। সুইস গোলকিপার ইয়ান সমারের কিছু করার ছিল না। প্রথমার্ধে আরও বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও গোল করতে পারেনি পর্তুগাল। সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন রামোসও। তবে বিরতীর পর পর্তুগালের গোল বন্যায় ভেসে যায় সুইজারল্যান্ড।
৫১ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন রামোস। ডান দিক থেকে দিয়োগো দালোতের পাস গোলমুখে পেয়ে টোকায় জালে পাঠান তিনি। এর চার মিনিট পরই স্কোরলাইন ৪-০ করে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন রাফায়েল গুয়েরেইরো। এই গোলেও জড়িয়ে রামোসের নাম। তার পাস বক্সে পেয়ে জোরাল শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ডিফেন্ডার।
তিন মিনিট পর কর্নারে উড়ে আসা বল প্রতিপক্ষের মাথা ছুঁয়ে দূরের পোস্টে পেয়ে যান মানুয়েল আকনজি। ছোট্ট টোকায় ব্যবধান কমান তিনি। তবে সুইজারল্যান্ডের এই হাসি চওড়া হতে দেননি রামোস। আট মিনিট পরই পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সে ঢুকে দারুণ চিপ শটে এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে জালে পাঠান রামোস। ২০০২ সালে জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসার পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে প্রথমবার শুরুর একাদশে নেমেই হ্যাটট্রিক করলেন তিনি।
দ্বিতীয় পর্তুগিজ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে হ্যাটট্রিক করলেন ২১ বছর বয়সী এই ফুটবলার। ১৯৬৬ আসরে কোয়ার্টার-ফাইনালে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ৪ গোল করেছিলেন গ্রেট ইউসেবিও।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন রোনালদো। এরপর তুলে নেওয়া হয় হ্যাটট্রিক করা রামোসকে। মাঠে নেমে রোনালদো বল জালে জড়ালেও অফসাইডের কারণে গোল বঞ্চিত হতে হয়েছে তাকে।
ম্যাচের ৯২ মিনিটে সুইসদের জালে শেষ পেরেক ঠুকেন রাফায়েল লিয়াও। গুরেইরোর অ্যাসিস্টে দারুণ এক গোল করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৬-১ গোলের বিশাল জয়ে শেষ আটে ওঠে পর্তুগাল।