নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল স্থগিতের বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। শনিবার (০৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির দলীয় কার্যালয় গোল্ডেন প্লাজায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে আহ্বায়ক সরফরাজ চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুজিবুর রহমান শেফু কাউন্সিল ও সম্মেলন কার্যকর করার কোন পদক্ষেপ না নিয়ে বার বার কাউন্সিল পিছিয়ে দিচ্ছেন।
সর্বশেষ হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির মিটিংয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতে আগামী ৯ নভেম্বর কাউন্সিল ও সম্মেলন করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেটিও কৌশলে স্থগিত করা হয়েছে। অথচ কাউন্সিলের প্রেক্ষিতে নবীগঞ্জের ১৩টি ইউনিয়নে কাউন্সিলকে ঘিরে প্রার্থীদের প্রচারণায় উৎসবমুখোর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমান আহ্বায়ক সরফরাজ চৌধুরী সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয়ের আশঙ্কায় নির্বাচন কমিশনকে কাউন্সিলের স্থান ও কাউন্সিল বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন করার জন্য আহ্বায়ক কমিটি কর্তৃক সভা আহ্বান করেন নি। অথচ কাউন্সিল সফলে বিভিন্ন উপ কমিটি গঠনে আহ্বায়ক কমিটির সভা আহবান প্রয়োজন ছিল।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা বারবার তাগিত দেওয়া সত্ত্বেও আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কমিটির সভা আহ্বান করেন নি। কিছু কিছু ভোটারের ছবি ও এন.আই.ডি কার্ডের ফটোকপি ইচ্ছাকৃতভাবে তারা করেনি বলে দাবি করা হয়। তারা কাউন্সিলের স্থান নির্ধারণ ও সম্মেলন প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন উপ কমিটি গঠন করে কাউন্সিল সফল করার কথা থাকলেও তারা তা বাস্তবায়ন না করে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।’
কেন্দ্রীয় বিএনপির সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে নির্বাচন কমিশনকে অসহযোগিতা করে যাচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন নেতৃবন্দ।
নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, আহ্বায়ক সম্মেলন করার প্রস্তুতি আয়েজন না করে তাদের পছন্দের প্রার্থীদেরকে সাথে নিয়ে সমগ্র উপজেলায় প্রচারণায় ব্যস্ত থাকেন। আহ্বায়কের পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে বিগত ৩০ তারিখে কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়াম্যান ও সিলেট বিভাগীয় দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়ক ডা. এ.জেড.এম জাহিদ হোসেন ও হবিগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের নিকট দরখাস্ত দাখিল করা হয়েছিল। আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে ও কাউন্সিলে পরাজিত হওয়ার ভয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কাউন্সিল স্থগিতের মিথ্যা বানোয়াট, অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন কর্তৃক কাউন্সিল স্থগিতের সম্পূর্ণ দায়ভার আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ককে নিতে হবে জানান নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, ‘কাউন্সিল নিয়ে আহ্বায়ক সরফরাজ চৌধুরীর দায়িত্বহীন ও পক্ষপাতমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল সফল করা সম্ভব নয় বিধায় আমরা আবারও আহ্বায়কের উপর অনাস্থা জ্ঞাপন করি।’
এসময় নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণাসহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় কর্মকাণ্ড ও সুচারুরূপে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব আহমদ চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মোক্তাদির চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল বারিক রনি, আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য মুর্শেদ আহমদ, আবুল খায়ের খায়েদ, জিল্লুর নুর, ফুলকাছ মিয়া, মির্জা আলী আজম রায়হানসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।