ঈদুল আযহার ছুটিতে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। কাঙ্খিত পর্যটক না থাকায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে ,পর্যটকদের পদচারনা কম থাকায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে শান্ত-নিরিবিলি পরিবেশ বিরাজ করছে। ফলে বনের মধ্যে বন্য প্রাণীদের মধ্যে উদ্যাম দেখা দিয়েছে। প্রাণীরা তাদের বাঁচ্চাদের নিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। তাই বন্য প্রাণীদের হাঁক-ডাক,হৈ-হুল্লোড়,চেঁচামেছি আর কলরবে মুখরিত হয়ে আছে।
জানাযায়, কমলগঞ্জ উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান,হামহাম জলপ্রপ্রাত, মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমান স্মৃতি সৌধ, ৭১ এর বধ্যভুমি, মাগুড়ছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, শমসেরনগর বিমান বন্দর, শিল্পকলা সমৃদ্ধ মনিপুরিসহ ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র জাতি গোষ্টির জীবনধারা ও সংস্কৃতি। এইসবকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে বিশাল পর্যটন কেন্দ্র। আর শিল্পের কারনে এখানে গড়ে উঠেছে নানা হোটেল-মোটেল,গেষ্ট হাউস,রিসোর্ট ও ট্যুর গাইড।
ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছুটে আসতেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার পর্যটকরা। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। পর্যটকদের উপস্থিতি কম। রবিবার ঈদের দিন সহ ঈদের পরের দিন ও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ইতিমধ্যে ছুটির ৩দিন অতিবাহিত হলে ও আশানুরুপ পর্যটক আসেননি।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকেট কাউন্টারের শাহিন আহমদ জানান, ১০জুলাই প্রাপ্ত বয়স্ক পর্যটক এসেছেন, ২২০জন, শিক্ষার্থী ১১২জন ও বিদেশী ১১জন। রাজস্ব আয় হয়েছে, ২৩হাজার ৫৫৩ টাকা। ১১জুলাই প্রাপ্ত বয়স্ক পর্যটক এসেছেন, ১৩২১জন, শিক্ষার্থী ১৮৪জন ও বিদেশী ৭ জন। রাজস্ব আয় হয়েছে, ৭৪ হাজার ৯৫৩ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মৌলভীবাজারের হোটেল ও রিসোর্টের অধিকাংশই শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। পর্যটন গন্তব্য হিসেবে এই জায়গা বেশ জনপ্রিয়। এখানে আছে প্রায় ১শটি হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস, রিসোর্ট ও কটেজ। এগুলোর মধ্যে সদর উপজেলার মোকামবাজার এলাকায় অবস্থিত পাঁচতারকা মানের দুসাই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, শ্রীমঙ্গল উপজেলার গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, টি-বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন শ্রীমঙ্গল টি রিসোর্ট অ্যান্ড মিউজিয়াম, লেমন গার্ডেন রিসোর্ট, নভেম ইকো রিসোর্ট, টি হ্যাভেন রিসোর্ট, বালিশিরা রিসোর্টসহ অধিকাংশ হোটেল-মোটেল প্রায় ফাঁকা বললেই চলে ।
শ্রীমঙ্গলের রাধানগরে অবস্থিত গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আরমান খান বলেন,পর্যটক না থাকার কারনে রিসোর্ট খালি পড়ে আছে। একই মন্তব্য করেছেন লেমন গার্ডেনের পরিচালক সেলিম আহমদ। সবখানে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে।
শ্রীমঙ্গল ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খালেদ আহমদ নিশ্চিত করেন, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় ৪৭ জন ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড আছেন, যাদের মধ্যে ২১ জন শুধু এই কাজই করেন। তাদের ও সময় কাটছে অলস অবস্থায়।