মাঙ্কিপক্স : সিলেটের স্থলবন্দরগুলোতে বাড়তি সতর্কতা

সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বব্যাপী ‘জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা’ জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে শনাক্ত হয়েছে মাঙ্কিপক্স। এরই মধ্যে দেশটির কেরালা রাজ্যে একজন মারাও গেছেন। এছাড়া দেশটির আরও পাঁচজনের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে।

এ অবস্থায় দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তাই সীমান্তের জেলাগুলোতে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি সতর্কতা। সিলেট জেলায়ও মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তামাবিল স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, তামাবিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি মেডিকেল টিম আছে। তারা এ বিষয়ে কাজ করছে। এছাড়া মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ যেহেতু দেখলেই বোঝা যায়, সেহেতু ওই টিম নিশ্চিত যে এখন পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে কেউ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। আর কখনো যদি কেউ মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত অবস্থায় প্রবেশ করে, সে ক্ষেত্রে মেডিকেল টিম তাকে শনাক্ত করতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে অনেক আগেই এই স্থলবন্দরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া করোনার সময় যে স্ক্যানিং টিম ছিল তারা এখনও আছে এবং কাজ করছে।

সিলেটের সহকারী সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত সিলেট ভয়েসকে বলেন, কোভিডসহ অন্যান্য রোগের স্ক্যানিংয়ে আমাদের যে মেডিকেল টিমটি কাজ করতো তারাই মাঙ্কিপক্স স্ক্যানিংয়ের জন্য তামাবিল বর্ডার এবং ওসমানী বিমানবন্দরে কাজ করছেন। তাদেরকে সেভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া আছে।

প্রস্তুতির বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, প্রস্তুতি বলতে মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে এটা নটিফিকেশনে আনতে হবে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেসব রোগ এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছড়াতে পারে সেগুলোকে ইনকানেকশন হেলথ রেগুলেশনের আওতায় আনা হয়। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) চুক্তির মতো একটি বিষয়। যেখানে বাংলাদেশ সিগনেটরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বব্যাপী ‘জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা’ জারি করেছে। আমরা (বাংলাদেশ) যেহেতু আইএইচআর (ইনকানেকশন হেলথ রেগুলেশন) এর সিগনেটরি, এ প্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং আমাদের আভ্যন্তরীন যে মেকানিজম আছে সেগুলো অলরেডি আমরা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে কার্যকর করেছি। আইএইচআর (ইনকানেকশন হেলথ রেগুলেশন) এর রেগুলেশন অনুযায়ী আমাদের মেডিকেল টিমগুলো স্ক্যানিংয়ের কাজ করছে।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান সিলেট ভয়েসকে জানান, মূল চেকপোস্টে যে পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন তাদেরকে মাঙ্কিপক্সের বিষয়ে সতর্ককতামূলক দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। যারা বাইরে থেকে আসবে তাদেরকে যথাযথভাবে পরীক্ষা করে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তেও মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলার সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালসহ সবকটি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসারদের নিয়ে মাঙ্কিপক্সের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

দুই দেশের বৈধ যাত্রীদের চেকপোস্টে স্ক্যান করা জরুরি বলে মনে করেন সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ।

ভারতের সঙ্গে মৌলভীবাজারের প্রায় ২৫৭ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা রয়েছে। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল সিন্দুরখান সীমান্ত এলাকা, কুলাউড়ার চাতলাপুর ও কমলগঞ্জের কুরমা এবং জুড়ী উপজেলার রাঘনা বটুলি সীমান্ত চেকপোস্ট হয়ে দুই দেশের মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করেন বৈধ এবং অবৈধভাবে।