একদিকে বিএনপির গণসমাবেশ, অন্যদিকে বিভাগজুড়ে পরিবহন ধর্মঘট। ফলে একদিন আগে থেকেই সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থান নিয়েছেন সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের নেতাকর্মীরা। মুহুর্মুহু মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে উঠছে মাঠ ও আশপাশের এলাকা। দলটির নেতারা বলছেন, সব বাধা উপেক্ষা করে জনসভা রূপ নেবে জনসমুদ্রে।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সিলেট শহর পরিণত হয়েছে মিছিলের নগরী। আর বিএনপি নেতাকর্মীদের পদচারণায় উৎসবমুখর সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ। বিভাগীয় গণসমাবেশ এই মাঠেই আগামীকাল শনিবার (১৯ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরিবহন ধর্মঘটের ভোগান্তি এড়াতে দুইদিন আগেই মাঠে চলে এসেছেন পার্শ্ববর্তী সব জেলার নেতাকর্মীরা। মাঠেই ঘুমাচ্ছেন তারা, মাঠেই চলছে খাওয়া-দাওয়া।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, সব বাধা উপেক্ষা করে জনসভা রূপ নেবে জনসমুদ্রে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, বিএনপির সমাবেশে জনসমাগম ঠেকাতে ধর্মঘট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্রই সমাবেশে উপস্থিতি কমাতে পারবে না। যত বাধাই আসুক, সমাবেশ সফল হবে। সিলেটের সমাবেশ ইতিহাস সৃষ্টি করবে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, কর্মসূচির নামে বিশৃঙ্খলা হলে শক্ত হাতে দমন করা হবে।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিএনপির গণসমাবেশে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। তবে সমাবেশের নামে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে আমাদের নেতাকর্মীরা তা শক্ত হাতে দমন করবে।
এদিকে বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে সিলেট বিভাগজুড়ে ধর্মঘট ডাকায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন পরিবহন নেতারা। তবে ধর্মঘটের সাথে রাজনৈতিক যোগসূত্র নেই বলে দাবি পরিবহন নেতাদের।
সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা এ ধর্মঘট ডেকেছেন। ধর্মঘটের সাথে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
এদিকে, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা ও সংঘর্ষ না ঘটে সেজন্য সিলেট নগরীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। পুরো শহরজুড়েই চলছে পুলিশের টহল। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও বিভিন্ন মোড়ে সিলেট মহানগর পুলিশের বিশেষ মহড়া দেখা গেছে। আপত্তিকর ঘটনা প্রতিরোধে এ টহল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ জানিয়েছেন, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সিলেটে যেন অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে পুলিশ বরাবরের মতোই পদক্ষেপ নেবে।