প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, পরিবেশ-প্রতিবেশ, জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার বন্ধে আমাদের আন্তরিক হতে হবে। সমাজকে বিশেষ করে তরুণ সমাজকে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার থেকে দূরে রাখতে রেডিও, টিভি, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে অভিভাবকসহ সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং আয়োজিত ‘ন্যাশনাল সেমিনার টু সাপোর্ট স্মোক ফ্রি এনভায়রনমেন্ট এন্ড টোবাকো কন্ট্রোল ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, দেশে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ তামাকের আগ্রাসন। পরোক্ষ ধূমপান অধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি ২৫-৩০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় শতকরা ২০ থেকে ৩০ ভাগ। কাজেই পাবলিক প্লেস ও পরিবহনগুলো শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতে ধূমপান না করে তা নিশ্চিত করতে হবে। তামাককে বিষবৃক্ষ বিবেচনা করে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশে ক্রমবর্ধমান ই-সিগারেটের ব্যবহার ভয়াবহ পর্যায়ে যাওয়ার আগেই এটি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। বাংলাদেশে ই-সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি, বিপণন ও ব্যবহার বন্ধে এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের জন্য সংসদ সদস্যরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংগঠন, এনজিওসহ সবার সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিংয়ের সভাপতি এবং সংসদ সদস্য ডা. মো. হাবিবে মিল্লাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর ফারহিনা আহমেদ, সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার, রওশন আরা মান্নান ও রুবিনা আক্তার এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান প্রমুখ।
সেমিনারে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি তাদের বক্তব্যে মানুষের এ ক্ষতিকর অভ্যাস পরিত্যাগের আহ্বান জানান।