কলাম লিখার জন্য যখন ল্যাপটপটা হাতে নিয়েছি তখনই টেলিভিশনের একটা খবরে চোখ আটকে গেল। খবরটি অং সান সু চিকে নিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে আটক আছেন মিয়ানমারের এই সাবেক নেত্রী। সম্প্রতি তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থার আবেদন জানানো হলেও দেশটির সামরিক জান্তা এই আবেদন নাকচ করেছে।
মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের ২ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাপানে আয়োজিত বিক্ষোভে সে দেশে বসবাসরত মিয়ানমারের নাগরিকরা অং সান সু চি সহ সব রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তি দাবি করেছেন। সু চি ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে আটক আছেন। সে সময় সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে অবৈধভাবে সু চিকে আটক করে রেখেছে। ১৯টি ফৌজদারি অপরাধে ২৭ বছরের আটকাদেশের মুখোমুখি হয়েছেন সু চি। অং সান সু চির স্বাস্থ্য নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’ জাতিসংঘের মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত। সু চি ইতোমধ্যেই গোপন সামরিক আদালতে অন্যান্য অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। যার শাস্তি হিসেবে একাধিক মামলায় ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাকে। আরও বিভিন্ন মেয়াদে তাঁকে ভুয়া মামলায় সাজা দেয়ার চেষ্টা করছে সে দেশের সামরিক সরকার।
১৯৯১ সালে যখন সু চিকে নরওয়ের নোবেল কমিটি নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়ার কথা ঘোষণা করে, তিনি তখন বার্মায় গৃহবন্দী। একবার বার্মা থেকে বেরুলে সামরিক জান্তা তাকে আর দেশে ফিরতে দেবে না, এমন আশংকায় তখন তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করতে যাননি এবং দেশে অবস্থান করেই সামরিক জান্তার সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করেন। নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার ২১ বছর পর বার্মার গণতন্ত্র-পন্থী নেত্রী আং সান সু চি-র সেই পুরস্কার গ্রহণ করেন।
সু চির মুক্তি বিষয়ে নোবেল কমিটি বা নোবেল প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ কে কে বিবৃতি দিয়েছেন সে বিষয়ে আমার জানার খুব আগ্রহ জাগলো। এবং অনেক খোঁজাখুঁজির পর তেমন কিছুই পেলাম না। বরং রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারে ধারাবাহিক নির্যাতনের ব্যাপারে সু চি তার নিশ্চুপ ভূমিকার কারণে সমালোচিত হয়েছেন। তাঁর নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহারেরও দাবি ওঠে। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার জন্য অনলাইনে এক আবেদনে স্বাক্ষর করেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। এই আবেদনেও অবশ্য নোবেল কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি। নোবেল বিজয়ীরাও তেমন উচ্চবাচ্য করেননি। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ বন্দী অবস্থায় থাকা সু চিকে মুক্তি দেয়ার জন্য নোবেল বিজয়ীরাও সক্রিয় নন, হিলারি ক্লিনটন, বারাক ওবামা বা নোবেল বিজয়ী মহান ব্যক্তিবর্গও তেমন আগ্রহ দেখাননি! ৯৫৪ জন নোবেল বিজয়ীর মধ্যে যারা এখনো জীবিত তাদের কারও আগ্রহ নেই সু চিকে নিয়ে কিংবা ২৭ নোবেল প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসতে পারেননি আং সান সু চি!
আমি মূলত লিখতে বসেছিলাম ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যুতে। ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি সু চি ইস্যুতে কলাম দীর্ঘ করার জন্য। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। এনজিও ব্যক্তিত্ব হিসেবে উনাকে বহু পূর্বে থেকেই চিনি। কিন্তু তিনি মূলত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন ২০০৬-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক আমলে, মাইনাস টু ফর্মুলাতে আমেরিকান নীল নকশায়। এখানে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাকে নিয়ে আমেরিকার আগ্রহ নতুন কিছু নয়, সেটা ১৯৭১ সালে হোক, ৭৫ হোক আর বর্তমানের যেকোনো ইস্যু হোক। ২০০৬-০৮ ইস্যুতে মাইনাস টু ফর্মুলা বিএনপি, আওয়ামী লীগ বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিপুল সমালোচিত হয়। তাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রবেশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বারা আর সম্ভবপর হয়ে উঠেনি। একটা ব্যাপার পর্যবেক্ষণ করলে দেখবেন, নির্বাচন ঘনীভূত হলেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে রাজনৈতিক মাঠ সরব হয়ে উঠে, ২০০৮/০৯ সাল কিংবা ২০১৩/১৪ কিংবা ২০১৮ অথবা অধুনা ২০২৩।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ মামলা মোকদ্দমায় বাংলাদেশে অভিযোগ অনেক গুরুতর। এইসব মামলায় বাদী শুধু সরকার বা প্রতিষ্ঠান নয়, খোদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দও। ইতোমধ্যে উনার মামলা মোকদ্দমা আলোচনা-সমালোচনায় এসেছে দেশে বিদেশে। বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটনসহ অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি খোলা চিঠি দিয়েছেন বিশ্বের ১৬০জন গুরুত্বপূর্ণ ও সুপরিচিত ব্যক্তি, যেখানে একশ’র বেশি নোবেল বিজয়ী রয়েছেন! ব্যক্তি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য এতো দরদ বিশ্ব দরবারে বিষয়টি অবাক হওয়ারই! এখানেই শেষ নয়, ড. মোহাম্মদ ইউনূস এবং মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ এর দুই নেতাসহ বাংলাদেশে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানবাধিকার কর্মী ও সুশীল সমাজের নেতাদের ওপর ‘হয়রানির’ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা।
মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে আলোচনা অনেক আগে থেকে চলে আসলেই অধুনা আলোচনায় আগুনে ঘি ঢালে ওয়াশিংটন পোস্ট এ বছরের মার্চ মাসে। কথিত আছে ওয়াশিংটন পোস্টের ৭৮ লাখ টাকার একটি বিজ্ঞাপনে ড. ইউনূসকে মহানায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নতুন কৌশল ব্যবহার করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি সরকারের ‘অন্যায় আচরণের শিকার’- এমন অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন বিশ্বের ৪০ বিশিষ্ট ব্যক্তি। যা গত ২০২৩ সালের ৭ মার্চ মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হয়। সেই বিজ্ঞাপনকে খবর আকারেও প্রকাশ করেছে দেশের ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার। অদ্ভুত ব্যাপার হল ড. ইউনূস কি ধরনের অন্যায় আচরণ কিংবা আক্রমণের শিকার; তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য ওই বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়নি। ওয়াশিংটন পোস্টের সপ্তম পাতায় বিজ্ঞাপনটি ছাপানোর পরদিন (৮ মার্চ, ২০২৩) ডেইলি স্টার এটিকে সংবাদ হিসেবে প্রকাশ করে। একটি বিজ্ঞাপনে ৭৮ লক্ষ টাকা কোন হিসাবে বলছি? ওয়াশিংটন পোস্টের সাত নম্বর পৃষ্ঠাটি বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার হয়। ৭ মার্চ ওই পৃষ্ঠায় সাড়ে ১৮ ইঞ্চি, পাঁচ কলামে ওই খোলা চিঠিটি ছাপানো হয়। ওই বিজ্ঞাপনের আকার ছিল সাড়ে ৯০ কলাম ইঞ্চি। ওই পৃষ্ঠায় মোট ছয় কলামের মধ্যে এক কলাম নিউজ ছিল। আর নিচের দিকে অন্য একটি বিজ্ঞাপন ছিল আড়াই ইঞ্চির। হিসাব করে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারির রেট অনুসারে বিজ্ঞাপনে খরচ পড়েছে ৫২ হাজার ১২৮ মার্কিন ডলার। টাকার হিসাবে যা দাঁড়ায় ৫৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৯৬ টাকা। কিন্তু গেল দুই বছরে সবকিছুর খরচ বেড়েছে। যে কারণে পত্রিকার বিজ্ঞাপন রেটও বেড়েছে। অনলাইনে পাওয়া তথ্যানুসারে বর্তমানে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতি কলাম ইঞ্চি বিজ্ঞাপনের রেট ৮০৭ ডলার। সে হিসাবে ইউনূসের এই বিজ্ঞাপনে খরচ পড়েছে ৭৩ হাজার ৩৩ ডলার। ডলারের দাম ১০৭ টাকা ধরে টাকায় যার মূল্য দাঁড়ায় ৭৮ লাখ ১৪ হাজার ৫৮৪ টাকা। এই টাকার উৎস কি?
হিলারি ক্লিনটন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব তা আমরা সবাই জানি। বাংলাদেশী কোন পত্রিকার সোর্সে যাবো না, খোদ বিবিসি জানাচ্ছে, গ্রামীণ আমেরিকা, যে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন মি. ইউনুস, ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে এক লাখ থেকে আড়াই লাখ ডলার অনুদান দিয়েছে। গ্রামীণ রিসার্চ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান, যেটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও রয়েছেন মি. ইউনুস, সেই প্রতিষ্ঠান থেকেও ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার অনুদান দেয়া হয়েছে। একটি পারিবারিক সংস্থায় এতো টাকা অনুদান (নাকি বিনিয়োগ!)! হিলারি ক্লিনটন কি আর শুকনো মুখে ইউনূস সাহেবের পক্ষে কথা বলেন!!
আমরা কিন্তু সাধারণ বাংলাদেশী হিসেবে প্রশ্ন করতেই পারি, ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের দুঃসময়ে শান্তির পায়রা ড. ইউনূস কোথায় ছিলেন, কিংবা ২০১৩ সালের রাজনৈতিক সংঘাতে, কিংবা একই বছর রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ১২০০ মানুষের লাশের মিছিলের সময়! কিংবা দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আড়াই হাজার বিকলাঙ্গ মানুষের জন্য কি শান্তির বার্তা তিনি পৌঁছে দিয়েছিলেন!
ব্যক্তি আমি বাংলাদেশী হিসেবে দাবী করতে পারি ড. মুহাম্মদ ইউনূস এইসব সংকটে আমাদের পাশে ছিলেন না কেন, কিন্তু ব্যক্তি ইউনূসের পক্ষে বাংলাদেশের সকল সংকটে উপস্থিত থাকা সম্ভব নয় এটা বাস্তবতা। একই বাস্তবতার নিরিখে প্রশ্ন রাখা যেতেই পারে বাংলাদেশের কোন কোন সংকটে তিনি পাশে ছিলেন। স্মৃতি শক্তি যদি ধোঁকা না দেয় তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি শুরুতে নীরবই ছিলেন, পত্রপত্রিকায় তাঁর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন হলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েই দায় সেরেছিলেন। নাগরিক হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে গর্ব করা আমি কি আশা করতে পারতাম না তিনি সরাসরি একটি ফোন দিবেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সতীর্থ সু চিকে! কিংবা অন্যান্য নোবেল বিজয়ী নিয়ে পাশে দাঁড়াবেন বাংলাদেশের ওই মহা সংকটে, যেমনটি এই মুহূর্তে তাঁর পাশে শত নোবেল জয়ী! মিয়ানমার সরকারের উপর কি একটি আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা যেত না! একই সময়ে তো পৃথিবীর লাখ লাখ মানুষ সু চির বিরুদ্ধে অনলাইনে সাক্ষর করে নোবেল প্রত্যাখ্যানের দাবী জানিয়েছিল রোহিঙ্গা ইস্যুতে।
কলামের এই পর্যায়ে আমি যদি তর্কের খাতিরে ধরেই নেই, বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আইনি মারপ্যাঁচে ফেলে হেনস্তা করা হচ্ছে, কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লবিং দেখলে বিস্মিত হই, ১০০ জন নোবেল বিজয়ী তাঁর পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছেন! যেখানে সাজা তো দূরের কথা, এখনো অভিযোগ আদালতে উত্থাপিত হচ্ছে, মামলাও বিচারাধীন, প্রমাণিতও হয়নি তিনি কোন অপরাধ করেছেন। এই অবস্থায়ই মি. ইউনূসকে নিয়ে এতো দুশ্চিন্তা বিশ্ব মোড়ল পরিবারে। অথচ পাশের দেশেই বছরের পর বছর সামরিক জান্তার আদালতে সাজা খাটছেন আরেক নোবেল বিজয়ী সু চি। বৃদ্ধার ২৭ বছরেরও বেশি সাজা ইতিমধ্যে ঘোষিত হয়ে গিয়েছে, আরও মামলা প্রক্রিয়াধীন। সু চির দুর্দিনে বিশ্ববিবেক গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
উপরন্তু, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সামরিক জান্তার শক্তির কাছে নিরুপায় সুচির বিরুদ্ধে আমরা লক্ষ লক্ষ সাক্ষর সংগ্রহ করলাম, দাবী তুললাম নোবেল ছিনিয়ে নেয়ার, এমন কি বাংলাদেশে বিএনপির একটি সমাবেশ থেকে ২০১৭ সালে একই ইস্যুতে অং সান সুচির নোবেল সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল করিব রিজভী। অথচ ইউনূস স্যারের ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট গুরুতর অভিযোগ থাকার পরও বিশ্ব মোড়লরা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান। নাকি নোবেল পুরস্কার ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে “দায়মুক্তির” সনদপত্র?
কে কেন, কিভাবে নোবেল পান বা পেয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন করা আহাম্মকি। কথায় আসলে কথা বাড়ে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস অর্থনীতিতে কাজ করে শান্তি নোবেল পেয়েছেন কেন এই প্রশ্ন আমি করতে চাই না, কারণ বারাক ওবামাও তো শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন (যদিও নোবেল কমিটির সাবেক কর্মকর্তা গায়ের লানডেস্টেড অনুশোচনা করেছিলেন ওবামাকে নোবেল দিয়ে)।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে। তাঁর ক্ষুদ্র ঋণের মডেল পৃথিবীর অনেক দেশেই সমাদৃত। কিন্তু সেই ২০০৭-০৮ সাল থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে মি. ইউনূসের পেছনে আমেরিকার দৃশ্যমান ইনভেস্টমেন্ট পণ্ডশ্রমের সামিলই মনে হচ্ছে। আজকাল একই নাম ঘুরে ফিরে আসছে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে অদৃশ্য ইশারায়। বাংলাদেশে নির্বাচনের পূর্বে প্রতিবারই নানা ধরণের নীলনকশা সামনে আসে। গণতন্ত্রের আকাশে লাল, নীল, হলুদ ঘুড়ি দেখতে পাই। কিন্তু একটি কথা ভুলে গেলে চলবে না, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে বিদেশী কূটচালে কেউ এদেশের ক্ষমতায় বসবেন সেই দিবাস্বপ্ন না দেখাই উত্তম। পুরো বিষয়টি গভীর পর্যালোচনায় সহজেই বুঝা যায়, একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ মামলা মোকদ্দমায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ইস্যুতে সদ্য আন্তর্জাতিক গেইমপ্ল্যান ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পায়তারা ছাড়া আর কিছুই না।
জন্মলগ্ন থেকেই অনেক নোংরা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে বাংলাদেশ আজ এ পর্যায়ে এসেছে এবং বিশ্বাস করি সকল ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ঠিকই সামনে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, বিশ্ব মানচিত্রে স্বতন্ত্র পদচিহ্ন রেখে।
- আনোয়ারুল হক হেলাল। সাবেক ছাত্রনেতা, প্রবাসি।