সিকান্দার রাজা ও ইনোসেন্ট কাইয়ার জোড়া সেঞ্চুরির কাছেই হার মানলো বাংলাদেশ। সেই সাথে ৯ বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে জয়ের দেখা পেল জিম্বাবুয়ে।
২০১৩ সালের ৮ মে সবশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তারপর আরও ১৯ ম্যাচে অপরাজিত থেকেছে বাংলাদেশ। তবে দীর্ঘদিন পর সেই গ্লানির স্বাক্ষী হলো বাংলাদেশ। ঘটল জিম্বাবুয়ের অপেক্ষার অবসান। একইসাথে নিজেদের প্রিয় ফরম্যাটে ৬ উইকেটের হার দিয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ।
যদিও হারারে স্পোর্টিং ক্লাবে ম্যাচের শুরু থেকেই সবকিছু ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। ব্যাটারদের ছন্দে ফেরার দিনে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ।
যদিও হারারের উইকেট ব্যাটিং করা দলের পক্ষে ম্যাচের আগের দিন থেকেই কথা বলছিল, কিন্তু সেটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর স্টিম রোলার চালিয়ে বড় পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
চার টপ অর্ডার তামিম-লিটন-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ; সবারই মেলে ফিফটির দেখা। চার ব্যাটারের ফিফটির সুবাদে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৩ রানের পুঁজি নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
ব্যাটারদের পর বল হাতেও বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। প্রথম দুই ওভারের ভেতরেই মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম তুলে নেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনারকে।
শুরুটা হয় ফিজের হাত ধরে। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে চাকাভবাকে ২ রানেই মাঠছাড়া করেন কাটার মাস্টার। পরের ওভারে আরেক ওপেনার তারিসাই মুসাকান্দা সাজঘরে ফেরেন শরিফুলের শিকার বনে।
এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে এসে ম্যাচের হাল ধরেন ইনোসেন্ট কাইয়া ও ওয়েসলি মাধেভেরে। কিন্তু দলীয় ৬২ রানে ভাগ্যের নির্মম পরহাসে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন মাধেভেরে। আর তাতে ভাঙে এই দুইজনের ৫৬ রানের জুটি।
৬২ রানে তিন উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের স্বপ্ন বোনা শুরু করে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তরা। কিন্তু কে জানত চারে নামা সিকান্দার রাজাকে সঙ্গে নিয়ে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেবেন কাইয়া।
চতুর্থ উইকেটে কাইয়া ও রাজা মিলে পাশার দান পুরোপুরি ঘুরিয়ে দেন জিম্বাবুয়ের। চাপকে যেন শক্তিতে পরিণত করে চড়াও হন বাংলাদেশের বোলারদের ওপর। মারকুটে ব্যাটিংয়ে কমিয়ে আনতে থাকেন বল আর রানের পার্থক্য।
যেখানে ২০ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের হাতে সেখান থেকে ৪০ ওভারের ভেতর বল নিজেদের কোর্টে নিয়ে আসেন এই দুই রোডেশিয়ান ব্যাটার। টাইগার বোলারদের তোয়াক্কা না করে ব্যাট চালাতে চালাতে দুজনেই ব্যাক টু ব্যাক তুলে নেন সেঞ্চুরি। আর তাতেই বাংলাদেশের প্রায় এক দশকের গর্ব বিচূর্ণ হয়।
১৯২ রানের জুটি গড়ে কাইয়া ১১০ রান তুলে ও লুক জঙ্গওয়ে ২৪ রানে ক্ষান্তি দিলেও আক্রমণ অব্যাহত রাখেন রাজা। ৫ উইকেটের জয় নিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন তিনি।