জগন্নাথপুরে প্রধানমন্ত্রীর বন্যার্ত সহায়তার টাকা আত্মসাৎ

অভিযুক্ত সুবল চন্দ্র দাস

বানভাসিদের ঘর মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের হীলালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী সুবল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, দপ্তরী সুবল চন্দ্র দাস তার বোনের নাম ব্যবহার করে এই টাকা আত্মসাৎ করছেন।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, বানভাসিদের ঘর মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রী উপহার দেওয়া ১০ হাজার করে টাকা হিলালপুর গ্রামের হতদরিদ্র দুই পরিবারের জন্য বরাদ্দ হয়। শশাংক দাস ও রনধীর তালুকদারের নামে বরাদ্দ হয় এই টাকা। কিন্তু সুবল চন্দ্র দাস তার বোন শেলি রানী দাসের আইডি কার্ড দিয়ে রনধীর তালুকদারের টাকাগুলো আত্মসাৎ করে নেন।

জানা গেছে, সুবল দাসের বোন হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার বাসিন্দা। সুবল দাসের বাড়ি পাকা ভবন। আর রনধীর তালুকদার এখন হীলালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্র অবস্থান করছেন। কারণ তার বাড়িতে এখনও বন্যার পানি রয়ে গেছে।

এ ঘটনায় বুধবার (১৩ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর পক্ষে ১০ জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়। এতে উপজেলার হীলালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী সুবল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার ১০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়।

এছাড়া সুবল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বসে মদ/মাদক সেবন, ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা নিজের স্বজনদের মোবাইল নম্বরে উত্তোলন এবং অনিয়মিত উপস্থিতিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

হীলালপুর গ্রামের বাসিন্দা আশিষ দাস বলেন, এলাকাবাসী বারবার প্রধান শিক্ষক মিরা রানী বনিককে সুবল চন্দ্র দাসের ব্যাপারে মৌখিকভাবে সতর্ক করার পরও তিনি তার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা দপ্তরী সুবল চন্দ্র দাসের অপসারণ ও তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

হিলালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিরা রানী বনিক বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি বাড়িতে ছিলাম।

তথ্যপ্রযুক্তি কর্মকর্তা আশিষ চক্রবর্তী বলেন, হিলালপুরের দুইজনের নাম সহায়তার তালিকায় ছিল। সুবল দাসের বোনের নামে টাকা নিয়েছে। সে এই এলাকার বাসিন্দা।

ইউপি সদস্য কয়ছর মিয়া বলেন, সুবল দাস ভুলে টাকা নিয়েছে। সে যে তার বোনের নামে টাকা নিয়েছে এ বিষয়টি আশিষ চক্রবর্তী জানেন, আমি জানি না।

অভিযোগের ব্যাপারে হিলালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী সুবল চন্দ্র দাস বলেন, আমার বোনের নাম তালিকায় আছে। তাই আশিষ চক্রবর্তী আমাকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন।

রানীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডা. ছদরুল ইসলাম বলেন, ভুলবশত সুবলের কাছে টাকা চলে গেছে। আমি বিষয়টি দেখছি। এ ব্যাপারে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ রইলো।