সিলেটের জকিগঞ্জের বৃহৎ সরকারি মইলাট জলমহাল জবরদখলকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষ মুখোমুখি। দুইপক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (১৬ নভেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফায়সালের কার্যালয়ে এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, একটি মহল মামলা-হামলাসহ বিভিন্ন অজুহাতে ৩০ বছর থেকে সরকারি প্রায় শত একর আয়তনের জলমহালটি জবরদখল ও লুটপাট করে আসছিল। সিলেটের সাবেক জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন। তিনি সরকারি জলমহালটি ১৪২৭ থেকে ১৪২৯ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ৩ বছরের জন্য জকিগঞ্জের সিরাজপুর সুর্যমূখী সমবায় সমিতির লিমিটেডের অনুকুলে ইজারা প্রদান করেন এবং প্রশাসনিকভাবে জেলার পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে গত দুই বছর অনেক মামলা-মোকদ্দমা ও দখল-পাল্টা দখল মোকাবেলা করে জলমহালের ইজারাদারকে মাছ চাষ ও আহরণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে সরকারের দখলে রাখেন।
বিগত দুই বছর জলমহালের তীরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ইজারাদারকে সহায়তা করা হয়। শেষ বছর ১৪২৯ বঙ্গাব্দে তৎকালীন জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জকিগঞ্জ থানার ওসি বদলি হয়ে গেলে মহলটি সম্প্রতি আবারও তৎপর হয়ে ওঠে। বিভিন্ন অজুহাতে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে জকিগঞ্জ আদালত ও থানায় কাল্পনিক মামলা দিয়ে ইজারাদার ও তার লোকজনকে হয়রানি করে মহলটি আবার জলমহাল জবরদখলে নিয়েছে।
ইজারাদার সিরাজপুর সূর্যমুখী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক রনজিত রাম দাস এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ ইতোমধ্যে আমার পাহারাদারদের অস্ত্রের মুখে তাড়িয়ে দিয়ে জলমহালের তীরে বাসা তৈরি করে দখল নিয়েছে।
এসব বিষয়ে বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উভয়পক্ষকে নোটিশ দিয়ে গণশুনানির আয়োজন করেন।
তিনি বলেন, সরকারের জলমহালটি সরকারি ইজারাদার ভোগ করবে। এতে কোনো ধরণের ছাড় দেয়া হবে না। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি জকিগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি), সার্ভেয়ার ও বারহাল ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তাকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে লাল পাতাকা দিয়ে সীমানা চিহ্নিত করার নির্দেশ দেন।