গোলাপগঞ্জে বৃদ্ধকে কীটনাশক খাইয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৫

সিলেটের গোলাপগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আলাই উদ্দিন (৫০) নামের এক বৃদ্ধকে জোরপূর্বক কীটনাশক খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

গত বুধবার (২ আগস্ট) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের বিদাইটিকর পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৩দিন পর শনিবার (৫ আগস্ট) ওই বৃদ্ধ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মার যান।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সাবজান বিবি বাদি হয়ে পরদিন (৬ আগস্ট) গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ৬জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা (মামলা নং ৫) দায়ের করেন। এদিকে মামলা রুজু হওয়ার ৬ঘন্টার মধ্যে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ পৃথক পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে এজহারভুক্ত ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের বিদাইটিকর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত হাছির আলীর পুত্র সিরাজ উদ্দিন (৪৫), সিরাজ উদ্দিনের পুত্র রাজু আহমদ (৩০), বদরুল আহমদ (২৬), একই গ্রামের মৃত নিছার আলীর পুত্র আমিন উদ্দিন (৫২), মৃত ওয়াছির আলীর পুত্র তাহির আলী (৬৫)। এঘটনায় সিরাজ উদ্দিনের স্ত্রী রেজিয়া বেগম (৪৩) ও ছেলে তারেক আহমদ (১৮) পলাতক রয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের বিদাইটিকর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত হাছির আলীর মেয়ে সাবজান বিবি তার স্বামী সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে আলাদা ভাবে বসবাস করে আসছেন। সাবজান বিবির ভাই সিরাজ উদ্দিনের সাথে একটি পুকুর নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে বিগত দিনেও মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। পরে বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মিমাংসাও করে দেয়া হয়েছিল।

গত মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সাবজান বেগমের মেয়ে বাবার বাড়িতে আসলে পুকুরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তার সাথে সিরাজ উদ্দিনের পরিবারের মারামারি হয়। এঘটনার জের ধরে পরদিন (২ আগস্ট) সাবজান বেগমের স্বামী আলা উদ্দিনকে সিরাজ উদ্দিন ও তার ছেলেরা ধরে নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে আটকে মারধর করে।

এক পর্যায়ে সিরাজ উদ্দিনের নির্দেশে এজাহারভুক্ত আসামিগণ তাকে জোরপূর্বক কীটনাশক খাইয়ে দেয়। এরপর ঘরের বাইরে ফেলে রেখে দেয়। তাৎক্ষণিক সাবজান বেগম খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে প্রতিবেশীদের সহায়তায় আলা উদ্দিনকে প্রথমে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। রোগীর অবস্থা বেগতিক হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তাররা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

সেখানে ৩দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৫ আগস্ট (বুধবার) আলা উদ্দিনের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পূর্বে তিনি প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে জোরপূর্বক কীটনাশক পান করানোর কথা বলে যান।

গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পলাতক বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

সিলেট ভয়েস/এএইচএম