সদ্য প্রয়াত প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের স্মরণে ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের অন্যতম সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুরারিচাঁদ কবিতা পরিষদের (মুকপ) আয়োজনে স্মৃতিচারণ, কবিতাপাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় কলেজে অবস্থিত সংগঠনটির মহড়া কক্ষে এ সভা সম্পন্ন হয়।
মুরারিচাঁদ কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রফেসর সুনীল ইন্দু অধিকারীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম গুলজারের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আকমল হোসেন, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর মোহাম্মদ তোফায়েল আহাম্মদ, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ বিলাল উদ্দিন, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দিলীপ চন্দ্র রায় ও মুক্তাক্ষরের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বিমল কর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ বলেন- লড়াইয়ে, সংগ্রামে, প্রেমে-বিরহে, দ্রোহে যাপিত জীবনের পরতে পরতে হেলাল হাফিজের স্পর্শ আছে। শুধু মুক্তিযুদ্ধ কিংবা গণঅভ্যুত্থানের মতো প্রেক্ষাপটে নয়, যেকোনো অন্যায়ে-শোষণে-অবিচারে হেলাল হাফিজের এ উচ্চারণ সবার হয়ে ওঠে।
কবির আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তিনি আরও বলেন- ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কাব্যগ্রন্থই হেলাল হাফিজকে দিয়েছে অসামান্য খ্যাতি। আধুনিক কবিদের মধ্যে তার ১৯৮৬ সালে তাঁর প্রথম প্রকাশিত এই কবিতাগ্রন্থটি তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল জনপ্রিয়তার শীর্ষে। বাংলা সাহিত্যের এই নিভৃতচারী কবি, যিনি সবসময় কবিতার মাধ্যমে আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন।’
মুক্তাক্ষরের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বিমল কর বলেন, সিলেটের সাহিত্য অঙ্গনে মুরারিচাঁদ কবিতা পরিষদ (মুকপ) ক্যাম্পাস পর্যায়ে থেকেও সাহিত্যের দীপ্তি ছড়াচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আজ কবি হেলাল হাফিজের স্মরণে স্মৃতিচারণ, আলোচনা এবং কবিতাপাঠ আয়োজনটি সিলেটের মাটিতে হেলাল হাফিজের স্মরণে এটাই প্রথম আয়োজন।
এর আগে, মুরারিচাঁদ কবিতা পরিষদের সদস্যদের একক কবিতাপাঠের মাধ্যমে প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজকে স্মরণ করা হয়।
এ সময় মুরারিচাঁদ কবিতা পরিষদের সকল সদস্য ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য: ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’, অমর এই পঙ্ক্তির রচয়িতা কবি হেলাল হাফিজকে (৭৬) গত শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রক্তাক্ত অবস্থায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।