ঈদুল আজহার আগে-পরে ১২ দিনে (৫-১৬ জুলাই) দেশে ২৭৪টি দুর্ঘটনায় ৩১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে এক হাজার ১৯৭ জন। মৃতদের মধ্যে ৪৩ নারী এবং শিশু রয়েছে ৫৮ জন। এর মধ্যে ১৫৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১২৩ জন মারা গেছেন। দুর্ঘটনায় পথচারী মারা গেছেন ৪৬ জন। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৩ জন।
একই সময়ে নয়টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৩ জন মারা গেছেন এবং ছয়জন নিখোঁজ রয়েছে। ১৪টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১১ জন মারা গেছেন এবং চার জন আহত হয়েছে।
৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজপোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১২৩ জন, বাসযাত্রী ৩৩ জন, ট্রাক-পিকআপ-লরি আরোহী ১৬ জন, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার যাত্রী ১৮ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী ৫৭ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ১০ জন এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী আটজন নিহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১০৯টি জাতীয় মহাসড়কে, ৭৭টি আঞ্চলিক সড়কে, ৬১টি গ্রামীণ সড়কে এবং ২৭টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৭৬টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৯৯টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৫১টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৪২টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ছয়টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত চালক ও আরোহীদের মধ্যে ৫৯.৩৪ শতাংশের বয়স ১৪-২০ বছর এবং নিহত পথচারীদের ৩২.৬০ শতাংশ বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত হয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালের ইদুল আজহা উদযাপনকালে ৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯৫ জন নিহত হয়েছিল। এই হিসেবে এ বছর ঈদুল আজহায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৮৫.৫৪% এবং প্রাণহানি বেড়েছে ১৯.৪৭%।
এদিকে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ৯৩টি দুর্ঘটনায় ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে কম ১৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ১৭ জন মারা গেছেন। একক জেলা হিসেবে টাঙ্গাইল জেলায় সবচেয়ে বেশি ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে কম খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, মাগুরা, ঝালকাঠি, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও জেলায়। এই ৯ জেলায় স্বল্পমাত্রার কিছু দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানীতে ১৯ দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।