পর্নোগ্রাফিতে শিশুর প্রবেশাধিকারের মাত্রা কতটা, শিশুদের ওপর করা একটি জরিপে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন বলছে, শতকরা ৭৫ দশমিক ১ জন শিশু, যাদের মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট কানেকশন আছে, তারা পর্নোগ্রাফি দেখে। শতকরা ২৬ জন মেয়েশিশু বলেছে যে, তারা আত্মীয়দের সঙ্গে পর্নোগ্রাফি দেখছে। শতকরা ১৪ দশমিক ৪ জন মেয়েশিশু দেখেছে অনাত্মীয়দের সঙ্গে।
বেসরকারি সংস্থা-ইনসিডিন বাংলাদেশের করা জরিপে শিশুর প্রতি সহিংসতার নানা চিত্র তুলে ধরা হয়।
মঙ্গলবার (৭ জুন) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশে শিশুর প্রতি সহিংসতা পরিস্থিতি’ শীর্ষক এই জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
জরিপে তথ্যানুযায়ী, শতকরা ৯৫ দশমিক ৮ জন শিশু নানাভাবে ঘরেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হয় বাবা-মা ও অভিভাবকদের দ্বারা। আর এসব নিপীড়ন চালানো হয় শান্তি ও নিয়মানুবর্তিতার ‘অজুহাতে’। শিশুকে শারীরিকভাবে অত্যাচার করার মধ্যে পড়ে হাত, জুতা, বেল্ট, বোতল দিয়ে মারা, লাথি মারা, টানাহেঁচড়া করা, চুল টানা, দাঁড় করিয়ে রাখা, হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখা, শরীর পুড়িয়ে দেওয়া, অতিরিক্ত শ্রম দিতে বাধ্য করানো এবং ঝাঁকি দেওয়া ও ছুড়ে ফেলা।
জুন ২০২০ থেকে মে ২০২১ পর্যন্ত মোট ১১টি জেলায় এই জরিপ চালানো হয়। জেলাগুলো হচ্ছে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা ও রাঙামাটি। ৫ হাজার ৭৪ জন শিশুর ওপর এ জরিপ চালানো হয়। এদের মধ্যে শহরের ৩ হাজার ১৩৪ জন শিশু এবং গ্রামের ১ হাজার ৯৪০ জন।
জরিপের তথ্য বলছে, শতকরা ৬২.১ জন প্রতিবন্ধী শিশু বলেছে, শুধু প্রতিবন্ধী শিশু হওয়ার কারণে তারা পরিবারে ও সমাজে হয়রানির শিকার হয়ে থাকে। এর মধ্যে ছেলে শিশু ৭৮.৬ শতাংশ এবং মেয়েশিশু ৫৫.২ শতাংশ।
জরিপে থেকে যে সুপারিশমালা উঠে এসেছে, এর মধ্যে আছে নীরবতার সংস্কৃতি ভাঙতে হবে। শিশুর প্রতি যেকোনও ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে হবে। শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে অনিরাপদ পারিবারিক অভিবাসন থামাতে হবে।