হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ ঘোষণা, অনুমোদন দিল মন্ত্রীসভা

পাল্টাপাল্টি তুমুল হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে।

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে স্থানীয় সময় শনিবার ভোর থেকে হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। এক পর্যায়ে যুদ্ধের ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। এরই মধ্যে রোববার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা কমিটি যুদ্ধ শুরুর অনুমোদন দিল। এখন ইসরায়েল ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে যেতে পারবে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের বিষয়টি এখন দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক কমিটিতে উঠতে হবে।

নেতানিয়াহু সেটি নেসেটের প্লেনারিতে উপস্থাপন করবেন, সেখানে অনুমোদনের পর ইসরায়েল সরকার দেশে জরুরি অবস্থা জারিসহ নানা পদক্ষেপ নিতে পারবে।

ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা সংঘাতে দু’পক্ষে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে।

পাল্টাপাল্টি হামলায় স্থানীয় সময় শনিবার থেকে রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত ফিলিস্তিনের ৩৭০ জন এবং ইসরায়েলের ৬ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দু’পক্ষের দাবির বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।

ফিলিস্তিনের গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ৩৭০ জন। দুই হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ৬ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই হাজারের বেশি মানুষ। আর বন্দি হয়েছেন শতাধিক।

গাজা উপত্যকার শাসক দল হামাস শনিবার ভোরে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালালে প্রাথমিক পর্যায়ে ৪০ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়। এরপর নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পরে পাল্টা বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলও। দু পক্ষই ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়েছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক ব্যাপক হামলায় দেশটিতে বহু মানুষ প্রাণ হারান। ওই হামলার জবাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামাসের আস্তানাগুলো গুঁড়িয়ে দেয়ার অঙ্গীকার করেন।

ইসরায়েলে অনেককে বিস্মিত করে শনিবার সকাল থেকে দেশটিকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো রকেট ছুড়তে থাকে হামাস। দলটির দাবি, ইসরায়েলের দিকে পাঁচ হাজার রকেট ছোড়া হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েল বলেছে, এ সংখ্যাটা আড়াই হাজার।

হামলার দিনটিকে ইসরায়েলের জন্য ‘কালো দিবস’ আখ্যা দিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সামরিক বাহিনী সর্বশক্তি দিয়ে হামাসের ওপর হামলা চালাবে।

হামাসের হামলায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর। গাজার শাসক দলের দাবি, তারা ইসরায়েলের অনেক সেনাকে বন্দি করেছেন।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় ২০০৭ সালে হামাস ক্ষমতায় আসার পর দলটির সঙ্গে বেশ কয়েকবার যুদ্ধে জড়ায় ইসরায়েল। পবিত্র আল-আকসা মসজিদের অবমাননা, গাজার শ্রমিকদের জন্য ইসরায়েলের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়াসহ নানা কারণে দুই পক্ষের সর্বশেষ উত্তেজনার ঘটনা ঘটে।