সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের মোট খাদ্যের বড় অংশের যোগান আসে হাওর থেকে। সেই হাওরকে বিপন্ন হতে দেওয়া যাবে না। হাওর এলাকার জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং জীবনমান উন্নয়নে শিক্ষক ও ধর্মী নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে। হাওর এলাকার শিশু-কিশোরদের নৈতিক ভিত্তি গড়ে দিতে শিক্ষকরা কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) নগরীর ইসলামিক ফাউন্ডেশন অডিটোরিয়ামে হাওর এলাকার জনগণের জীবনমান উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে স্কুল-মাদরাসা শিক্ষক ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধকরণ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের পরিচালক মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. এমদাদুল হক।
সৈয়দ ফখরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী এই সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেটের জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক মহসিনুর রহমান ও জেলা মৎস্য অফিসের সিনিয়র সহকারী পরিচালক সীমা রাণী বিশ্বাস।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. এমদাদুল হক হাওর এলাকার সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, দেশের হাওর এলাকায় ১৪৩ প্রজাতির দেশীয় ও ১২ প্রজাতির স্থানীয় মাছ উৎপাদিত হয়। যেটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মোট মাছ উৎপাদনের ২০ শতাংশ। এছাড়া কৃষি জিডিপির ২২ দশমিক দুই শতাংশ উৎপাদন হাওর থেকে এসে সামগ্রিক অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। কিন্তু নানা কারণে হাওর আজ বিপন্ন। জলমহাল ইজারানীতি উপেক্ষা করে যত্রতত্র বাঁধ নির্মাণ এবং প্রতিবছর বিলগুলো সেচ করে ও কারেন্ট জালের মাধ্যমে মৎস্য প্রজনন কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্ষাকালে পথ-ঘাট ডুবে যাওয়ার ফলে হাওর এলাকার শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারে না বলে ছেলেরা ধীরে ধীরে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ে আর মেয়েরা বাল্যবিবাহের শিকার হয়। এ বিষয়টি নিয়ে এখনই ভাবতে হবে।
সেমিনারে সিলেটের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আগত বিপুল সংখ্যক স্কুল ও মাদরাসা শিক্ষক এবং ধর্মীয় ব্যক্তিরা অংশ নেন। সেমিনারের দ্বিতীয় সেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে হাওর এলাকা নিয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন তারা।
