ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে রাত থেকে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে দমকা হাওয়ার সঙ্গে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ায় সেন্টমার্টিনে নোঙর করে রাখা ১৫টি মাছ ধরা ট্রলার ডুবে গেছে। উড়ে গেছে এই দ্বীপের বেশকিছু ঘরের চাল। নাফ নদসহ সাগরের পানি বেড়ে যাওয়ায় সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আরও ঘনীভূত হয়ে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ভোরে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে উপকূলীয় বাসিদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে তাদের আগ্রহ নেই বলে জানা গেছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ এরফানুলক হক চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এই উপজেলায় ৭৮টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সেন্টমার্টিনের সকল হোটেল-মোটেল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাগরে বুকে জেগে ওঠা সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপকে বিশেষ করে নজরে রেখেছি। এসব দ্বীপে জনসাধারণকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে। তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ঘূণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সকাল থেকে প্রচন্ড হাওয়া শুরু হয়েছে। তবে ভাটার কারণে সাগরে পানি একটু কমেছে। ইতোমধ্য সাগরে আঘাতে জেটিতে নোঙরে থাকা ১৫টি ফিশিং ট্রলার ডুবে গেছে। তার মধ্য সাগরে ভেসে গেছে দুটি ট্রলার। বেশকিছু ঘরে চাল উড়ে গেছে। উপকূলের লোকজনকে সরিয়ে দ্বীপের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া জন্য মাইকিং চলছে।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ আশ্রয়কেন্দ্র যায়নি। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের দিয়ে দ্বীপের সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
দ্বীপের বাসিন্দা মোহাম্মদ জয়নাল জানান, সকাল থেকে দ্বীপে বাতাস বেড়েছে। দ্বীপের চেয়ারম্যানসহ একটি দল মাইকিং করে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন। এখনও মাইকিং চলছে, তবে কেউ সাড়া দিচ্ছে না।
আরেক বাসিন্দা আবদুল আজিজ বলেন, ঘূর্ণিঝড় আসলে দ্বীপের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কাটে। কারণ সাগরের মাঝে আমাদের বসতি। এছাড়া আগের তুলনায় দ্বীপের অবস্থা ভালো না। সাগরে সামান্য পানি বাড়লে দ্বীপের চারদিকে ভেঙে যায়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় জেলার উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ করে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।