ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলকৃত খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহারকে রুশ সেনাবাহিনীর ‘প্রকৃত দুর্বলতা’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় বুধবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, মস্কো যে চূড়ান্ত সমস্যার মুখোমুখি তা একেবারে স্পষ্ট। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
বুধবার হঠাৎ করে রুশ সেনাদের খেরসনের পশ্চিম তীর থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। সেপ্টেম্বরে যে চারটি ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে ঘোষণা করে খেরসন সেগুলোর একটি। ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার দখল করা একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানী ও বৃহত্তম ভূখণ্ড হলো খেরসন। খেরসন প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী হলো খেরসন শহর। ডিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীরে খেরসন শহরের অবস্থান।
এমন বাস্তবতায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, এই পদক্ষেপে প্রমাণ করে যে প্রকৃত অর্থে সমস্যার মধ্যে রাশিয়া এবং তাদের সামরিক বাহিনী।
রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই দেশের জন্যই খেরসন কৌশলগতভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া এতদিন যে কোনও মূল্যে খেরসনের নিয়ন্ত্রণে ধরে রাখতে চেয়েছিল। কারণ তাদের দখলকৃত ক্রিমিয়া থেকে সরাসরি স্থলপথে রুশ ভূখণ্ডে ঢুকতে হলে খেরসন একমাত্র পথ।
ডিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর খেরসন শহর থেকে পিছু হটছে রাশিয়া, এ বিষয়টি এখনই নিশ্চিত করতে চায় না ইউক্রেন। বরং এটা বড় কোনও ফাঁদ যেন না হয় সেজন্য আরও সতর্ক অবস্থানে কিয়েভ। ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়ার কিছু বাহিনী এখনও খেরসনে রয়েছে গেছে এবং অঞ্চলটি আরও অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার রাতে ভার্চুয়ালি ভাষণে ভলোদিমির জেলেনস্কি তার বাহিনীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, লড়াই এখনও শেষ হয়ে যায়নি। শত্রুরা আমাদের কোনও কিছু উপহার দেয় না, শুভেচ্ছাও জানায় না। আমরা আমাদের জায়গা থেকে লড়ছি। আপনি যখন যুদ্ধ করছেন তখন বুঝতে হবে, প্রতিটি পদক্ষেপ শত্রুর সঙ্গে লড়ছেন। আমাদের বীর যোদ্ধাদের জীবন যাচ্ছে। সুতরাং আবেগ এড়িয়ে খুব সাবধানে এগিয়ে যাচ্ছি। অপ্রয়োজনীয় কোনও ঝুঁকি নিতে চাই না। এটা আমাদের পুরো ভূখণ্ডের মুক্তির স্বার্থে।
খেরসনের পশ্চিম তীর থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ প্রায় ৯ মাসের যুদ্ধে রাশিয়ার সবচেয়ে বৃহত্তম পিছু হটা। এটি যুদ্ধের একটি সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।
তবে রাতে প্রেসিডেন্ট জেলেস্কির জ্যেষ্ঠ সহযোগী ওলেক্সি আরেস্টোভিচ’র বলেন, খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা মস্কোর উদ্দেশ্য অস্পষ্ট রয়ে গেছে।