সুনামগঞ্জে নারী পুলিশের নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী

সুনামগঞ্জে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নারী সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ঘর থেকে পালিয়ে পাড়ার একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেয় শিশুটি। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের জামতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নারী মনিতা সিনহা সুনামগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।

জানা যায়, আনারস খাওয়ার অপবাদে শিশুকে টয়লেট পরিষ্কার করার ব্রাশ দিয়ে মেরে রক্তাক্ত করা হয়। এমন ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এসে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার ছাড়া শিশুটিকে নিয়ে যেতে চাইলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকাবাসী। দীর্ঘক্ষণ পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় তারা অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার না করলে পথ ছাড়বেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।

এলাকাবাসী জানান, শহরের জামতলায় সুনামগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এএসআই মনিতা সিনহা গত মাসে বাসা ভাড়া নেন। তিনি তার গৃহে কাজ করা শিশুটিকে নির্যাতন করতেন। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মনিতা সিনহা শিশুটিকে মারধর করলে সে ভয়ে বাসা থেকে পালিয়ে পাড়ার একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

নির্যাতিত শিশু রিয়া জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ সে ওই বাসায় কাজ করে। সেখানে তাকে কথায় কথায় মারধর করা হয়। মার সহ্য করতে না পেরে সে পালিয়ে গিয়ে দোকানে আশ্রয় নেয়। তার বাবা-মা কারও মোবাইল নম্বর তার কাছে নেই।

বাড়ির মালিক তাজুদ মিয়া শিশু নির্যাতনের সত্যতা জানিয়ে বলেন, এক মাস আগে ওই পরিবার বাসা ভাড়া নেয়। সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় বাসা ভাড়া দেই। কিন্তু উনার আচার-আচরণ, চলাফেরা খুবই খারাপ। তাই এ মাসেই তাকে বাড়ি ছাড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছি।

সুনামগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাজেদুর হাসান জানান, ঘটনাটি শুনেছি। সত্যতা পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। আইনের চোখে সবাই সমান।

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও মিডিয়া) রিপন কুমার মোদক জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। তাকে চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা পরে শিশুটিকে থানায় এনে তার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।