সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশের কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণে ভারতীয় সরকার যে আপত্তি বা বাধা দিয়ে আসছে তা তারা প্রত্যাহার করে নেবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
নয়াদিল্লি সফরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের জানান মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যা ছিল। ১৫০ গজের মধ্যে যে সমস্ত স্থাপনা নির্মাণ করার চেষ্টা করেছিলাম, ভারত এটাতে বারবার বাধা দেওয়ায় কাজ হচ্ছে না। যেমন ধরেন আমাদের রেললাইন। তারা (ভারত) এগুলোতে তাদের অবজেকশন উইথড্র করেছে। যার ফলে, আমাদের কাজগুলো সুচারু হবে। কয়েক জায়গাতে তারা (আপত্তি) তুলে নেবে।’
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধায় আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবন, কসবা রেলওয়ে স্টেশন ও সালদা নদী সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশে ডিজেল পাঠাবে ভারত
আগামী ১৮ মার্চ থেকে ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন দিয়ে দেশে ডিজেল আসবে। এ প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ভারত আমাদের ডিজেল পাঠাবে। লাইন হয়ে গেছে। ১৮ মার্চ ভার্চুয়ালি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এটার উদ্বোধন করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন দিয়ে ভারত থেকে সরাসরি পরিশোধিত তেল (ডিজেল) আসবে দিনাজপুরের পাবর্তীপুর ডিপোতে।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই পাইপলাইনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। পরে ২০২০ সালের মার্চে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ভারতের লুমানিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) এবং বাংলাদেশের মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে প্রায়ই অসন্তোষ হিসেবে সামনে আসে সীমান্ত হত্যা। ভারতের শীর্ষ পযায় থেকে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় আনার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও প্রায়ই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) দ্বারা বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর আসে গণমাধ্যমে।
জি-২০ মন্ত্রীদের সম্মেলন এবং রাইসিনা ডায়লগে যোগ দেওয়ার ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গটি তোলেন মোমেন। তিনি জানান, দিল্লি সফরটা খুব ফলপ্রসূ হয়েছে। ভারতের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, যেগুলো ছোটোখাট সমস্যা আছে।
মোমেন বলেন, আমরা এগুলো আবার তুলেছি। আমি বলেছি, অঙ্গীকারটা রাখেন। আমরা কেউ চাই না, তারাও চায় না একটা লোক মারা যাক।
আর অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো যখন পাঠাবে (ভারত), হঠাৎ করে সাপ্লাই বন্ধ করে দেয়, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অনেক সময় মার্কেট ঠিক আগে থেকে জানা যায় না বলে এমন হয়। তারা (ভারত) বলেছে, এ বিষয়টা তারা দেখবে।