সিসিক নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ, অপেক্ষা শুধু ভোটারের

সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি। দিনের আলো ফুটে সকাল ৮টা বাজতেই শুরু হবে ভোট উৎসব। ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন আর স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ খেকে সব রকমের প্রস্তুতি নেয়া হয়ে গেছে। এখন শুধু অপেক্ষা ভোটারদের জন্য।

সিসিকের বর্তমান অবস্থান : 
৭৯.৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৪২টি। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৯০টি। এই ১৯০ ভোটকেন্দ্রর মধ্যে ১৩২ টিকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে মত দিয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। এবারের সিসিক নির্বাচনে মোট ভোট কক্ষ ১৩,৬৭ টি।

এবারের নির্বাচনে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ভোট দেবেন মোট ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮১১ জন ভোটার যাদের মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৭৩ জন, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৪১৮ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৬ জন। এবারই প্রথম সিটি করপোরেশনে ভোট দিচ্ছেন সিসিকের বর্ধিত অংশের ও নতুন ভোটার মিলিয়ে মোট ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭৩ জন।

ভোট গ্রহণে দায়িত্ব পালন করবেন মোট ৪ হাজার ২৯১ জন কর্মকর্তা। যাদের মধ্যে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সংখ্যা ১৯০জন, সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ১৩৬৭ জন ও পোলিং কর্মকর্তা ২৭৩৪ জন।

নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার :
২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন গঠিত হবার পর তিনটি নির্বাচন ব্যালটের মাধ্যমে হলেও এবারই প্রথম সবকটি ওয়ার্ডে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অবশ্য এর আগে ২০১৮ এর নির্বাচনে সিসিকের একটি ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এবারের নির্বাচন সরাসরি পর্যবেক্ষণ ও সার্বক্ষণিক নজরদারির জন্য প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে নির্বাচন কমিশন। তাই কমিশনের নজর এড়িয়ে ভোটে অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের শঙ্কা কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ভোট ১৯০টি ভোট কেন্দ্রে ১৭৪৭টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ :
নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরবিচ্ছিন্ন করতে এবারের সিসিক নির্বাচনে দায়িত্ব পাালন করবেন প্রায় ২৬০০ পুলিশ সদস্য। এছাড়া মাঠে থাকবেন ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৪২টি ওয়ার্ডে ৪২ জন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট। প্রতিটি টিমের সাথে থাকবে ১ প্লাটুন করে বিজিবি।
নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১ জন পুলিশ পরিদর্শকের নেতৃত্বে থাকবেন ১ জন উপ পুলিশ পরিদর্শক ও ৫ জন পুলিশ সদস্য। আর কম ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১ জন পুলিশ পরিদর্শকের সাথে ১ জন উপ পুলিশ পরিদর্শক ও ৪ জন পুলিশ সদস্য থাকবেন। প্রতিটি কেন্দ্রে ৭ জন নারী ও ৭ জন পুরুষসহ মোট ১৪ জন করে আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

আরও পড়ুন : আনোয়ারুজ্জামানের প্রার্থীতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট

এছাড়াও প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে পুলিশের একটি করে মোট ৪২টি টহল টিম থাকবে। প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ড মিলিয়ে থাকবে একটি করে স্ট্রাইকিং টিম। এছাড়া প্রত্যেক থানায় একটি করে রিজার্ভ স্ট্রাইকিং টিম থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের ২২ টি ও ১০ প্লাটুন বিজিবির টহল টিম থাকবে।

নির্বাচনে লড়ছেন কারা :
এবারের সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) ও জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম দলীয় প্রতীক (গোলাপফুল) মার্কায় নির্বাচন করবেন। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া), মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট), মো. শাহ জাহান মিয়া (বাস গাড়ি) ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ) প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তবে এদের মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশনে অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্বাচন বর্জন করেছেন ইসলামী আন্দোলনের হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা)।

আরও পড়ুন : যে কেন্দ্রে ভোট দেবেন আনোয়ারুজ্জামান

এবারের নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে নির্বাচন করছেন ২৭২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। আর সংরক্ষিত ওয়ার্ড বা নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন ৮৭ জন।