প্রচারণা শেষ হয়েছে একদিন আগেই। রাত পোহালে ভোট। তবে এখনো চলছে ভোটের মাঠের নানা হিসেব-নিকেশ, জল্পনা-কল্পনা। এরইমধ্যে সিলেট জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলছে। এই চারটি আসনেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তীব্র প্রতিদ্বন্দিতার মুখে পড়তে পারেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
জয়ের ব্যাপারে নির্ভার থাকা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা হলেন-সিলেট-১ (মহানগর-সদর) আসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ-জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট) আসনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। এছাড়া বাকি ৪টি আসনেই চ্যালেঞ্জের মুখে নৌকার প্রার্থীরা।
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান (ট্রাক), বর্তমান সংসদ সদস্য গণফোরামের মোকাব্বির খান (উদীয়মান সুর্য) ও জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী (লাঙ্গল)। এরইমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে তার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান সঙ্গে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএমএ’র মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল। এই আসনের সাবেক দুই এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস ও শফি আহমদ চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকদের প্রত্যক্ষ সমর্থনে ডা. দুলালের ট্রাক প্রতীক নৌকার জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। এছাড়া এ আসনে জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমানও শক্ত প্রতিদ্বন্দীতা গড়ে তুলতে পারেন।
সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রার্থী মাসুক উদ্দিনের জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর কেটলি প্রতীক। কারণ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কেটলির বিজয় ত্বরান্বিত করতে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছেন। ফলে দলীয় প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ রয়েছেন নৌকা ডোবার শঙ্কায়। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির শাব্বীর আহমদ (লাঙ্গল) নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় মূল প্রতিদ্বন্দিতা হবে নৌকা আর কেটলির, এমনটাই ধারণা স্থানীয়দের। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আহমদ আল কবিরের ট্রাক প্রতীকও আছে আলোচনায়।
সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনে ৬ জন প্রার্থী থাকলেও নৌকার প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের মাথাব্যথার কারণ তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী (সোনালী আঁশ) ও আওয়ামী লীগেরই স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন (ঈগল)। এই আসনে তিনভাগে ভাগ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এই তিন প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের বড় অংশটি নির্বাচনের মাত্র সপ্তাহখানেক আগে শমসের মুবিনের পক্ষে জোরালোভাবে মাঠে নামেন। আর সরওয়ারের সাথে আছে বিয়ানীবাজার উপজেলার অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। একারণে নুরুল ইসলাম নাহিদ নিজ ঘরেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। এছাড়া এ আসনে জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিনকে (লাঙ্গল) শক্ত প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।