সিলেটে শহীদ পরিবারের শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ

সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটিতে জুলাই বিপ্লবে শহিদ পরিবারের শিক্ষার্থীরা বিনা বেতনে পড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ও  ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ রাগীব আলী আুষ্ঠানিক এই ঘোষণা দিয়েছেন ।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) লিডিং ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ দপ্তর  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রতিষ্ঠাকাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ রয়েছে। সেই ধারায় বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে অনুষ্ঠিত স্মরণসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সৈয়দ রাগীব আলী জুলাই বিপ্লবে শহিদ পরিবারের জন্য এই ঘোষণা দেন।

জনসংযোগ দপ্তর  জানায়, বাংলাদেশের শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, উপমহাদেশের অন্যতম দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। লিডিং ইউনিভার্সিটিতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের জন্য বিনাবেতনে পড়ার যেমন সুযোগ রয়েছে, তেমনি জুলাই বিপ্লবে শহিদ পরিবারের শিক্ষার্থীরাও বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পাবেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় শহিদ পরিবারের সদস্য, আহত এবং কারা নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করেন। তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ড. সৈয়দ রাগীব আলী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক লিডিং ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আসিফুর রহমান দিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুস শহীদ। পবিত্র গীতা পাঠ করেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সৌমিত্র দাস। সভার শুরুতে জুলাই আন্দোলনে আত্মত্যাগীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও আধুনিক বিজ্ঞান অনুষ্ঠানের ডিন এবং অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহবায়ক ড. মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, রেজিস্ট্রার মো. মফিজুল ইসলাম। পরবর্তীতে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিচারণে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য দেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বশির আহমেদ ভুঁইয়া, আধুনিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন রুমেল এম. এস. রহমান পীর,  প্রক্টর মো. মাহবুবুর রহমান, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ শাহানশাহ মোল্লা এবং সিলেটের ডাক পত্রিকার অতিথি সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বাসন।

অনুষ্ঠানে শহিদ পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে বক্তব্য দেন, শহিদ সাংবাদিক আবু তাহের মো. তুরাবের ভাই ও পুলিশের গুলিতে আহত লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নিশাত আনজুম, কারা নির্যাতিত শিক্ষার্থী জুলাই বিপ্ল­বের অন্যতম সমন্বয়ক মো. আবুল হাসান নাবিল এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে লিডিং ইউনিভার্সিটির যেসকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সক্রিয় অবদান রেখেছেন, তাদের মধ্যে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. জেহাদুল ইসলাম মনি, সমন্বয়ক মাহবুবুর রহমান শান্ত, তোফায়েল আহমেদ, সায়মন সাদিক জুনেদ।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সৈয়দা সালসাবিল ইসলাম আরিয়ার সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অনুপ্রেরণা ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচারাল ক্লাবের সদস্যরা। কবিতা আবৃত্তি করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. জাহিদ হাসান।

পুরো অনুষ্ঠানে লিডিং ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেলথ বিভাগের প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল মজিদ মিয়া, পরিচালক মিহির (অর্থ ও হিসাব) মোহাম্মদ কবির আহমেদ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোহাম্মদ মোস্তাক আহমেদ,  বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক -শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।