সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের ১২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯ (র্যাব)।
বুধবার (২৭ মার্চ) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯ একাধিক দল অভিযান চালিয়ে সিলেট মহানগরীর বন্দরবাজার, চৌহাট্টা পয়েন্ট, মহাজনপট্টি, রেলস্টেশনসহ আরও কয়েকটি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের হেফাজত থেকে সুইচ গিয়ার, চাকু, এন্টিকাটার, কাঁচি, ব্লেড, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা এবং অটোরিকশা জব্দ করা হয়।
বুধবার বিকেলে র্যাব-৯ এর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ছিনতাইকারীরা হলো- সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল হালিম (৬০), একই উপজেলার টেকারঘাট গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে জীবন আহমেদ (২১), পূর্ব নিশ্চিতপুর এলাকার মৃত ছিদ্দিক আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৫), সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার গুলগাঁও গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে আল ইসলাম (৩২), ধর্মপাশা উপজেলার শান্তিপুর গ্রামের আব্দুর কাদিরের ছেলে উজ্জল মিয়া (৩৫), একই উপজেলার রাজাপাশা গ্রামের মৃত ফজর আলীর ছেলে জহুর বাদশা (৩২), ছাতক উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মৃত সোহরাব আলীর ছেলে সোহেল আহমেদ (৩৯), হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা গ্রামের মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে রুয়েল (২৫), সিলেটের বিমানবন্দর থানাধীন চৌকিদেখি এলাকার মস্তর আলীর ছেলে ছালিম চৌধুরী, কোতোয়ালি থানাধীন ছড়ারপাড় এলাকার ময়না মিয়ার ছেলে মো. জিহাদ আহমেদ (১৬), গোলাপগঞ্জের লক্ষ্মীপাশা গ্রামের মৃত ফরিদ মিয়ার ছেলে বাবুল (২৫) ও পঞ্চগড় সদর থানাধীন নিমনগর গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে জাকির ওরফে ইমন (২০)।
র্যাব-৯ জানায়, পবিত্র মাহে রমজান এবং আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজ, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা নিরীহ মানুষকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা, ব্যাগ, মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মূল্যবান দ্রব্যাদি ছিনতাই করে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। এরই প্রেক্ষিতে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনতে র্যাব-৯, সিলেট গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই এর সাথে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে র্যাব জানায়, সিলেট শহরের বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় একাধিক সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। এসব ছিনতাইকারী সাধারণ পথচারী, রিকশা আরোহী, সিএনজি আরোহী, যানজটে থাকা যানবাহনের যাত্রীদের টার্গেট করে তাদের সুবিধাজনক স্থান ও সময়ে ছিনতাই কার্যক্রম পরিচালনা করে। সিএনজিতে যাত্রী বেশে অবস্থান নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে সিএনজি থামিয়ে সিএনজিতে থাকা অন্যান্য যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ কিংবা পার্স ছিনিয়ে নেয়। সাধারণত ইফতারের কিছু পূর্বে এবং ইফতারের পরে বিভিন্ন মার্কেট ও জনবহুল স্থানে ছিনতাই এর ঘটনা ঘটে। এরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে, পাড়া মহল্লায় আড্ডা দেয়। সুযোগ বুঝে তারা ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করে।
এদিকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেপ্তারকৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। আসন্ন ঈদে সিলেটবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে সিলেটে আগত ও সিলেট হতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাওয়া ব্যক্তিরা যাতে নিরাপদে ঈদের কেনাকাটা করে নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারে এ লক্ষ্যে ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৯, সিলেট এর গোয়েন্দা তৎপরতা এবং চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র্যাবের কর্মকর্তারা।