শীত কেটে গিয়ে চলছে বসন্তকাল। এই ফাল্গুনে সারাদেশের মতো সিলেটেও বইছে গরমের আগমনের বার্তা। ক্যালেন্ডারে গ্রীষ্মকাল আসার আগেই শুরু হবে পবিত্র রমজান মাস। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল হলেও ক্যালেন্ডারের হিসাবে আগামী ২৩ মার্চ থেকে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান।
গত বছরের ভোগান্তির পর বিগত শীতকালে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বেশ উন্নতি হলেও শীত চলে যেতেই আবার লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি পোহানো শুরু করেছেন সিলেটবাসী। আসছে রমজান মাসে সিলেটে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে কি না, তা নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় সিলেটবাসী।
এদিকে দুই মাসের ব্যবধানে দেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে তিন দফা। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। এর আগে জানুয়ারিতে দুই দফা বাড়ানো হয়েছিল বিদ্যুতের দাম। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে আবারও বাড়ানো হলো বিদ্যুতের দাম।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলেও কাঙ্খিত সরবরাহ পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। বিভিন্ন সময় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখছে বিউবো। এর বাইরেও অসংখ্যবার লোডশেডিংয়ে পড়তে হচ্ছে সিলেট নগরবাসীকে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগে বর্তমানে দৈনিক ৩৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা আছে। এর মধ্যে ৩৫০ থেকে ৩৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ফলে কিছু জায়গায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। রমজানে জরুরি সেবাখাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সকল প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। রমজানে সিলেটবাসীকে ইফতার ও সেহরির সময়সহ রাতের বেলায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিভাগীয় অফিসের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) সিলেট বিভাগীয় অফিসের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল কাদির জানান, আসন্ন রমজান মাসে সিলেট বিভাগে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা সর্বনিম্ন ৬৭০ মেগাওয়াটের মতো দাঁড়াবে। রমজানে ইফতার ও সেহরির সময়সহ রাতের বেলায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশনা আছে। জাতীয়ভাবে নতুন কোনো সমস্যা না হলে রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র আগামী কিছুদিনের মধ্যে সচল হয়ে যাবে। এছাড়া জাতীয় গ্রিডে ভারতের আদানি থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ যোগ হলে রমজানে সিলেটে বিদ্যুৎ নিয়ে তেমন সংকট হবে না।
আব্দুল কাদির জানান, দেশে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। তবে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের কারণ পুরোদমে তা উৎপাদন করা যাচ্ছে না। গ্যাস ও কয়লার অভাবে কমে গেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। লোডশেডিংয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে।
তিনি জানান, জরুরি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য সিলেটে প্রায়ই বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়। এটি সিলেটের একটি প্রকল্প। শীতকালে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা জরুরি।