সিলেটে বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হলেও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। এরই মধ্যে বুধবার (১৯ জুন) সিলেট অঞ্চলে ফের ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বুধবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সিলেট বিভাগে বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘন্টায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে রংপুর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভুমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার দিনভর বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হলেও উজানের ঢলে নদনদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট সিটি করপোরেশেনের ২১টি ওয়ার্ডসহ জেলার ১৩ উপজেলার ১১৬ ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ১ হাজার ৩২৩টি গ্রামের প্রায় ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মাত্র তিন ঘন্টায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট জানায়, কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে গতকাল মঙ্গলবার ১৫ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যা বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপরে ছিল। আজ বুধবার সকাল ছয়টায় এক পয়েন্ট কমে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল নয়টায়ও অবস্থা অপরিবর্তি রয়েছে।
তবে এই নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে গতকালের তুলনায় আজ বুধবার আরও বেড়েছে। গতকাল পানি বিপৎসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকাল ৬টায় তা বেড়ে বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল নয়টার প্রতিবেদনে অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ বুধবার সকালে তা অনেকটা কমে বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল নয়টায় আরও দুই পয়েন্ট কমে ৯১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে গতকালের চেয়ে আজ সকালে আরও বেড়েছে। গতকাল এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকালে তা বেড়ে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল নয়টায় এক পয়েন্ট কমে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে নদনদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট সিটি করপোরেশেনের ২১টি ওয়ার্ডসহ জেলার ১৩ উপজেলার ১১৬ ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ১ হাজার ৩২৩টি গ্রামের প্রায় ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
জেলা প্রশাসন আরও জানায়, বন্যাদূর্গত এলাকার ১৭ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। আগামী তিনদিন ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
