সিলেট নগরের ধোপাদিঘির পাড়ে ‘বিউটিফিকেশন অব ধোপাদিঘি’র উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (১১ জুন) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এ সময় সিলেটের উন্নয়নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন খুবই আন্তরিক উল্লেখ করে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেট আমাকে আকৃষ্ট করে। এই সিলেটের সার্বিক উন্নয়নে মোমেন সাহেব খুবই আন্তরিক। তিনি খুবই চমৎকার মানুষ। তাঁর ভাই (প্রয়াত আবুল মাল আব্দুল মুহিত) যেভাবে একজন আলোকিত মানুষ ছিলেন, দেশের গর্ব ছিলেন, ঠিক তেমনভাবে মোমেন সাহেবও একজন গুণী মানুষ। আমার ক্ষমতা অনুযায়ী সিলেটবাসীর জন্য বরাদ্দ দেব।
তিনি বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্ধিত এলাকার উন্নয়নের জন্য একটা বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আমি আপনাদের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে কথা বলব। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমার বাড়ি ধোপাদিঘি এলাকায়। এই দিঘি অনেক বড় ছিল। মুঘল সম্রাট আমলে এটা ধোপাদের কাজে ব্যবহার হতো। আজ এই দিঘিতে ওয়াকওয়ে নির্মাণ হয়েছে। আমরা এখন থেকে এখানে হাঁটব। এতে আমি খুবই আনন্দিত।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন, ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন।
প্রসঙ্গত, সিলেটের পুরনো কারাগারের পাশের এই দিঘিটিতে স্থানীয় ধোপারা কাপড় ধৌত করতেন। এ থেকেই দিঘিটির নাম ধোপাদিঘি হয় আর এলাকার নাম হয় ধোপাদিঘির পাড়। একপর্যায়ে দিঘির পাড় দখল করে প্রভাবশালীরা নির্মাণ করে স্থাপনা। নগরের ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ এই দিঘিটি সংরক্ষণ ও সৌন্দর্য্যবর্ধনের লক্ষ্যে ভারত সরকারের অর্থায়নে ‘বিউটিফিকেশন অব ধোপাদিঘি’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। প্রকল্পের অধীনে দিঘি খনন, চারপাশে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ, রেলিং ও লাইটপোস্ট বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।
প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ২০১৮ সালের শেষদিকে ধোপাদিঘি দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় সিটি করপোরেশন। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে কাজে ধীরগতি দেখা দেয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুরোদমে শুরু হয় প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পে ভারত সরকার ২১ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা অর্থায়ন করে।