কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও সিলেট জজ কোর্টের এসিসটেন্ট পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট প্রবাল চৌধুরী পূজনের বাসায় সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তিন সহ সভাপতি ও আইন সম্পাদকের উপর ওই ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, বরিকুল ইসলাম বাধন, মাইনুল হাওলাদার ও আইন সম্পাদক মো. তাওহীদ বনি।
তাদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দপ্তর সেলে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক সাদি মোহাম্মদ আকাশ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়-
“বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, গতকাল (১০ আগস্ট, ২০২৩) সিলেটে ঘটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের উদ্দেশ্যে নিম্নে উল্লেখিত ০৪ (চার) সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো এবং তদন্ত কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দপ্তর সেলে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হলো।”
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাত আটটার দিকে সিলেট নগরীর দাঁড়িয়াপাড়াস্থ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও সিলেট জজ কোর্টের এসিসটেন্ট পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট প্রবাল চৌধুরী পূজনের বাসভবনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় স্প্লিন্টারবিদ্ধ হন পূজন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে অ্যাডভোকেট পূজনের সমালোচনার জেরে ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
জানা গেছে, সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী মোটরসাইকেল করে দাড়িয়াপাড়া পয়েন্টে জড়ো হন। এসময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পূজনের বাড়িতে ও দোকানে হামলা চালায়। হামলাকারীরা কয়েক রাউন্ড গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় পূজন বাসায় ছিলেন না। হামলার খবর শুনে তিনি বাসায় আসার পথে তাকে লক্ষ্য করে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে পায়ে স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে পূজন আহত হন। পরে হামলাকারীর মিছিল দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরে অ্যাডভোকেট পূজন সিলেট ভয়েসকে জানান, সিলেট জেলা ও মহানগরের ছাত্রলীগের কমিটি এবং চিনি চোরাচালান নিয়ে তিনি ফেসবুকে কয়েকটি পোস্ট করেন। পরে দলের অভিভাবক ও ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অনুরোধে তিনি পোস্টটি মুছে ফেলেন। এই পোস্টের জেরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্বে তার বাসায় হামলা চালানো হয়। হামলায় নেতৃত্ব দেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমেদ, ছাত্রলীগ নেতা জিয়ান, রিফাত সহ অন্তত তিন শতাধিক নেতাকর্মী।
পূজন জানান, হামলায় তিনি ডান পায়ে স্প্লিন্টারবিদ্ধ হয়েছেন। ওই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান জানান, তিনি এখনও বিষয়টি জানেন না। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
একইভাবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দামও হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বিস্তারিতভাবে খবর নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেবেন।
এমন বাস্তবতায় ঘটনার পরদিনই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করলো বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ।