সিলেট-শিলচর সরাসরি বাস চলাচলের প্রক্রিয়া শুরু

বহুল প্রতীক্ষিত সিলেট-শিলচর সরাসরি বাস চলাচলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, সিলেট-শিলচর বাসের প্রস্তাব দিয়েছি, এখনও ফাইনালাইজড হয় নি। এটা প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

শুক্রবার (০৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেটে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ ডায়লগের সিলেট-শিলচর উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘একসময় সিলেট-শিলচর বাস সার্ভিস ছিল। শিলচরের সাথে আমাদের অনেক ব্যবসা ছিল। আবার সিলেট-শিলচর বাস সার্ভিস হলে দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়বে। ব্যবসা বাণিজ্যও বাড়বে। এটা প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু আমাদের সবগুলো প্রক্রিয়াই লেন্দি।’

এ প্রক্রিয়ায় ভারতের অবস্থান সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত তাদের রাস্তাঘাট ঠিক করে ফেলেছে, সুন্দর বর্ডার তৈরি করেছে। আমাদের বর্ডারই আমরা ঠিক করতে পারি নি। আমাদের অনেক কাজ করার অনেক প্রয়োজন। তবে আমাদের ইদানিং যে সম্পর্ক আছে যার ফলে ভারত আমাদের সহজে এই প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করছে।’

সিলেট-শিলচর উৎসবের প্রাপ্তি সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করি। এতে দুই দেশের সম্পর্ক সুসম্পর্কে রুপান্তরিত হয়। চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়, দুই দেশের মধ্যে নতুন সৃজনশীল কিছু করা যায় কি না। এর মাধ্যমে একে অপরকে বুঝার সুযোগ পায়।

আরও পড়ুন : উন্নয়ন প্রকল্পে বিলম্ব, জড়িতদের শাস্তি দাবি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

এসময় তিনি, শিগগিরই ঢাকা-গৌহাটি বিমান সার্ভিস চালু হবে জানিয়ে বলেন, প্রথমে প্রস্তাবনা ছিল ঢাকা-সিলেট-গৌহাটি বিমান চালু করার। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আপাতত ঢাকা-গৌহাটি বিমান চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। সিলেট-গৌহাটি বিমান চালু না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ধীরগতির সম্প্রসারণ কাজের বিষয়টি উল্লেখ করেন।

বলেন, ‘আমাদের দেশী প্রজেক্টগুলো সহজে শেষ হতে চায় না। বিদেশি হলে সময়ের আগেই তারা কাজ শেষ করে দেয়। আমাদের কি কারণে দেরী করে এর সঠিক কারণ আমি জানি না। দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ না হলে সংশ্লিষ্টদের শাস্তির আওতায় আনা উচিৎ।’

বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ ও ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ভারতের স্টেট ফর এডুকেশন এন্ড এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার ড. রাজকুমার রঞ্জন সিং, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার মি. প্রণয় ভার্মা, সাবেক মন্ত্রী ভিনসেন পালাসহ দুই দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

এসময় দুই দেশের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ-ভারতের কালচারার ও পলিটিক্যাল সম্পর্কের পাশাপাশি সব ক্ষেত্রে ঐক্যের তাগিদ দেন।

আরও পড়ুন : বাংলাদেশের সাথে সবক্ষেত্রে ঐক্য চায় ভারত

বক্তব্যে ভারতের স্টেট ফর এডুকেশন এন্ড এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার ড. রাজকুমার রঞ্জন সিং বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সোনালী অধ্যায় রয়েছে। জি-২০’র মাধ্যমে বাংলাদেশ লাভবান হয়েছে। রেল, রোড, পানি ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ রয়েছে। আগরতলার সঙ্গে রেললিংক সংযোগ হবে। মোংলা সমুদ্র বন্দর সুবিধার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরো লাভবান হবে। বিশেষ করে নেপালের সঙ্গে ভারতের গ্রীড লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ সুবিধার পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। ভারত থেকে সোস্যাল ইকোনোমিক্যালি বাংলাদেশ লাভবান হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেম্বার অব গভার্মেন্ট কাউন্সিল শ্রীসুরেয়া দোভাল বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের কালচারার ও পলিটিক্যাল ইতিহাসের মিল রয়েছে। তদ্রুপ সব ক্ষেত্রে ঐক্য প্রয়োজন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারত পার্লামেন্টের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ভিনসেন পালা বলেন, বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের শিলংয়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক ব্যবসার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে ব্যবসার ক্ষেত্রে এই দুটি স্থানের ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা আদান-প্রদান করে থাকেন। যে কারণে আমাদের দুই দেশের মধ্যে টেকনোলজি শেয়ার করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। তাছাড়া চিকিৎসা ক্ষেত্রেও বাংলাদেশীদের আসা যাওযার ক্ষেত্রে ভিসার প্রয়োজনীতা আরো সহজীকরণ এখন সময়ের দাবি। এ ধরণের ডায়লগের মাধ্যমে এসব গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে।

ভারতের সাবেক সংসদ সদস্য স্বপন দাস গুপ্ত বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘ সময় সম্পর্ক। এই সম্পর্কটা গুরুত্বপূর্ণ। এরআগে শিলচর কাছাড়ের ডায়লগটাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ।