সব ধাপ পেরিয়ে সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক (প্রাথমিক) নির্বাচিত হয়েছেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার চেলারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছামৎ ফাতেমা বেগম। পেশার প্রতি দায়িত্বশীলতা, নতুন উদ্ভাবনী চিন্তাধারা, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বিশেষ যত্ন, ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে পাঠদান ও সাংস্কৃতিক চর্চায় বিশেষ অবদান রাখায় তাঁকে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত করা হয়।
প্রথমে নিজ উপজেলা, এরপর পর্যায়ক্রমে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা শেষে সেরা নির্বাচিত হয়ে এবার দেশসেরার দৌড়ে গ্রামীন জনপদের এ নারী শিক্ষক। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২২ এ বিভাগীয় পর্যায়ে নির্বাচিতদের তালিকা গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরাদের নির্বাচিত করা হয়।
প্রতিবছর জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী, শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শ্রেণিতে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে দেশসেরাদের নির্বাচিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ফাতেমা বেগম ১৯৮০ সালে ছাতকের ভাতগাঁও ইউনিয়নের ঝিগলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত কবি আবুল কালাম ও মাতা সুরেজা বেগম। এক ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ফাতেমা দ্বিতীয়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্রসন্তান ও এক কন্যাসন্তানের জননী।
ফাতেমা ১৯৯৬ সালে এসএসসি ও ১৯৯৮ সালে এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হয়ে ২০০১ সালে সফলতার সাথে বিএসসি পাশ করেন। তিনি ২০০৩ সালে বাদে ঝিগলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর ২০০৭ সালে পদোন্নতি পেয়ে একই উপজেলার শ্রীপতিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরে বদলি সূত্রে চেলারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন।
ফাতেমা বেগম চেলারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই অত্যন্ত সুনাম, সততা, যোগত্য ও দক্ষতার সাথে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি প্রশাসনিক প্রশিক্ষণসহ শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাস ও সহ-পাঠ্যক্রমিক, শিক্ষামূলক কার্যক্রম ত্বরানিতসহ অত্যন্ত সুনামের সাথে ভালো ফলাফল অর্জন করে আসছেন।
ফাতেমা বেগমের এই অর্জনে গর্বিত তাঁর পরিবার, নিজ এলাকা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পর তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তাঁর শুভাকাঙ্খিরা।