সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি দিব্য সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ৩৫ মিনিটের সময় শাহপরাণ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
গ্রেপ্তারকৃত দিব্য সরকার নগরীর কাজলশাহ ৫২ নম্বর বাসার রমনীকান্ত সরকারের ছেলে। সে মহানগর ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও মেডিক্যাল কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদি হয়ে মঙ্গলবার সিলেট কতোয়ালি থানায় আটজনকে অভিযুক্ত করে দুটি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে হামলা মামলায় প্রধান আসামি করা হয় দিব্য সরকারকে।
এর আগে বুধবার দুপুরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ও ইন্টার্ন চিকিৎসককে শ্লীলতাহানির হুমকিদাতাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা।
এসময় তারা হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। অবস্থান কর্মসূচির কারণে রিকাবীবাজার-বাগবাড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পরে। এসময় সড়কটিতে আটকা পড়ে শতশত যানবাহন। বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়েন এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।
প্রায় একঘন্টা সড়ক অবরোধ শেষে হাসপাতালের পরিচালকের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিলেও কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় বৈঠক হলেও কারো আহ্বানেই সাড়া দিচ্ছেন না তারা।
এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে থাকায় হাসপাতালে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা থেকে।
এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে থাকায় হাসপাতালে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
বিষয়টি স্বীকার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান ভূইয়া জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে থাকায় কিছুটা প্রভাব পড়লেও অন্যরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের নিরাপত্তা জোরদার করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গত শনিবার রোগীর স্বজনদের সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসকের ঝগড়ার জের ধরে সোমবার রাতে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বহিরাগতরা।
সেদিন, রাতেই কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ওই রাতেই দু’জনকে আটক করলেও একজনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসন ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক হলেও দাবি আদায় হয়নি বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। তাদের প্রধান দাবি হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার। সর্বশেষ দিব্য গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের আংশিক দাবি পুরণ হয়েছে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার তাদের পূর্বঘোষিত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলবে কি না তা জানা যায়নি।