শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলাবাজারের একটি টং দোকানে আলাপ হচ্ছিল উপজেলা নির্বাচন নিয়ে। আলাপকারীদের একজন ষাটোর্ধ্ব আর অপরজন পচিশোর্ধ্ব যুবক। চায়ের ধূমায়িত কাপে জমে ওঠছে নির্বাচনী আলাপ। নানা তর্ক-বিতর্ক শেষে বৃদ্ধ তরুণকে হুঙ্কার দিয়ে বললেন, ‘যে মানুষ আমরারে উন্নয়ন দিছে, রাস্তাঘাট, দিছে, কালভার্ট দিছে, সরকারি ভবন দিছে, তার ফুয়ারেই ভোট দিমু। অনেক নেতাফেতারে দেখছি একটা ইটও বোয়াইতে পারছেনা। আর ই বেটায় আমরারে বদলাইলিছে। ব্যাটার উন্নয়ন দেইক্যা অইন্য এলাকার মানুষ হিংসায় মরের। আমরা যুদি ই ব্যাটার ফোয়ারে ভোট না দেই তাইলে মাইনসে আমরারে লইজ্জা দিব।’
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীর ছেলে আনারস প্রতীকের প্রার্থী সাদাত মান্নান অভিকে ভোট দেওয়ার কথা বলে এভাবেই রাজনীতির মাঠে সজ্জন খ্যাত এমএ মান্নানের উন্নয়নের প্রশংসা করেন আস্তমা গ্রামের মাসুক মিয়া। তার মত একই কথার পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করা গেল আসামপুর গ্রামের শফাত মিয়া, কাদিরপুর গ্রামের আম্বিয়া বেগম, বেতকোণা গ্রামের আব্দুল হান্নানসহ এলাকার প্রবীণ ও নবীন ভোটারদের মধ্যে।
শুধু যে মন্ত্রীর উন্নয়নের কারণেই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তার ছেলেকে ভোট দিবেন এটা নয়, গত কয়েক মাস ধরে নির্বাচনী মাঠে সাদাত মান্নান অভির বিচরণ দেখেও সচেতন ভোটার ও সুধীজন তার ভক্ত হয়ে গেছেন। তারা জানিয়েছেন ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অপর দুই প্রার্থী এমএ মান্নান ও তার ছেলে সাদাত মান্নান অভির বিরুদ্ধে আপত্তিকর, মানহানিকর ও অসত্য প্রলাপ করলেও অভি তাদের মতো বাক্যবাণে প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিদ্ধ করছেন না।
তারা জানান, সাদাত মান্নান অভি যুক্তরাজ্যের মতো দেশে বিশাল অঙ্কের বেতনে চাকরি করতেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক ফার্মের কনসালটেন্ট হিসেবেও মোটা অংকের সম্মানী পান। স্বপ্ন ও সুখের দেশের বিলাসী জীবন ছেড়ে তিনি এসেছেন মাটির টানে, নাড়ির টানে নিজের বাড়িতে। পিতার মতো উন্নয়ন দর্শন ও মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন করতে বেছে নিয়েছেন জনসেবার পথ। রঙ্গিন জীবনকে তুচ্ছ করে কাদাজলে মাখামাখি করে তিনি মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। স্বপ্ন দেখাচ্ছেন পিতার মতো এলাকায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে।
বেতকোণা গ্রামের আব্দুল হান্নান সিলেট থেকে ছুটে এসেছেন। এসে কাজ করছেন সাদাত মান্নান অভির জন্য। তিনি বলেন, ‘একজন যোগ্য, সৎ ও আদর্শ পিতার সন্তান অভিকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করতে পারলে আমাদের মঙ্গল। কারণ উচ্চশিক্ষিত ও বিনয়ী মানুষ কখনো মানুষকে আঘাত করেনা। সেবা ও ভালোবাসা দিয়ে মানুষকে কাছে টানে। সাদাত মানান্ন অভি নির্বাচনী মাঠে এসে ভালোবাসা ও আচরণ দিয়ে মানুষকে মুগ্ধ করছেন। আমরা তার মতো ভালো মানুষকেই ভোট দিব। যার কাছে আমরা নিরাপদ থাকবো।’
কাদিরপুর গ্রামের আম্বিয়া বেগম বলেন, ‘মন্ত্রীসাব আমরার এলাকারে বদলাইয়া দিছইন। বাইরে গেলে মাইনসে আমরারে কয় হকলতা তাইন আমরারে দেলাইছইন। তাইনের কারণেই আমরা এলাকায় সরকারি বিল্ডিং, পুল, রাস্তা, ইস্কুল, কলেজ, আসপাতাল দেখরাম। তাইনের পুয়ারে আমরা ভোট দিয়া পাশ করাইমু।’
আসামপুর গ্রামের শফাত মিয়া বলেন, ‘আমার খুশি সাদাত মান্নানের মতো শিক্ষিত, স্মার্ট মানুষকে জনসেবক হিসেবে পেয়েছি। তাইন লন্ডনের লাখ লাখ টেকার চাকরি ছাইড়া আমরার সেবা করতায় আইইছন। তাইনরে ভোট দিলে আমরার লাভ অইব। উন্নয়ন অইবো। উন্নয়ন জাগাত থাকবো।’
সাদাত মান্নান অভি বলেন, ‘বিদেশের উন্নত জীবন রেখে আমার এলাকায় ফিরে এসেছি মানুষের সেবা করতে। এই এলাকার মাটি ও মানুষ আমার অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছেন। আমি আমার জীবন মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করতে চাই। আশা করি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় মানুষ আনারস প্রতীকেই ভোট দিয়েই তাদের পাশে আমাকে থাকার সুযোগ করে দিবেন।’
উল্লেখ্য, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নে ১৫৫টি গ্রাম রয়েছে। ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ উপজেলায় ৫৬টি ভোট কেন্দ্রে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৯৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।