সরকারের মন্ত্রিসভার তিন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা সংসদ সদস্য নন, তারাও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। মন্ত্রিসভার যেসব সদস্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত নন তাদের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী বলা হয়।
পদত্যাগপত্র জমা দানকারী তিন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হলেন- ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
রোববার (১৯ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘টেকনোক্র্যাট কোটায় যারা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তারা আজকে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা সংসদ সদস্য নন, তারাও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী- পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যাবে। তিনি সেটি গ্রহণ করলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
এদিকে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সভায় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ও উপদেষ্টারা নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবে না।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতি বা উপমন্ত্রী মিলিয়ে মন্ত্রিসভায় রয়েছেন মোট ৪৮জন। অর্থাৎ তিনজনের পদত্যাগের পর মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়াবে ৪৫ জন। সংবিধান অনুযায়ী, বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার।
এর আগে ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন। সেটা ছিল তফসিলের আগে। ওই বছর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় ৮ নভেম্বর।
নির্বাচন কমিশন এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে ১৫ নভেম্বর। ৪ দিনের মাথায় ১৯ নভেম্বর টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগের খবর পাওয়া গেল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনের এ তারিখ জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, তার আগে ৯০ দিনের মধ্যে ভোট হতে হবে। সেই হিসাবে গত ১ নভেম্বর নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা আছে।