বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মানুষ যখন দিন দিন ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথের মিছিলে শরিক হচ্ছে ঠিক সেই সময় সরকার তার পুরোনো কায়দায় গুম, গ্রেফতার, নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ২৮ জুলাইয়ের পর থেকে প্রতিদিনই গ্রেফতার ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রবিবার (২০ আগস্ট) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে সরকার নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য বিরোধী পক্ষকে নির্বাচনে অযোগ্য এবং নেতাকর্মীদের নির্বাচনী মাঠ থেকে তথাকথিত আইনি প্রক্রিয়ায় বিতাড়িত করার সব অপকৌশল গ্রহণ করে চলেছে। নির্বাচনের আগে বিরোধীদের মাঠশূন্য করতে সরকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে নেমেছে।
তিনি বলেন, শনিবার হবিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে আহত করেছে। ঢাকায় দেশব্যাপী ঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শেষে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শত শত পুলিশ ও সাদা পোশাকধারী পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ঘিরে রেখেছে। দলীয় কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ বেশ কিছু নেতাকর্মীকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করেছে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে ঘিরে এক ভয়ংকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে; যা কোনো স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক আচরণ হতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, এর আগে ছাত্রদলের ছয় নেতাকে তুলে নিয়ে যায়। তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে নাটক সাজিয়ে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রের নির্দেশে তারা অস্ত্র সরবরাহ করছে বলে ডিবি যে দাবি করেছে তা ডাহা মিথ্যা। অবিলম্বে তাদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। এ সময় শনিবার সারা দেশে পদযাত্রায় হামলা ও গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের তালিকা তুলে ধরেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, প্রতিদিনই সারা দেশে নেতাকর্মীদের নামে মামলা, হামলা, গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। সরকারপ্রধানের নির্দেশে কিছু সংখ্যক অতিউৎসাহী দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তা এহেন বেআইনি কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য মাঠ পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে।
এছাড়া বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে বিভিন্ন মামলায় সাজানো সাক্ষীদের সরকারি বাহিনী দিয়ে বাড়ি থেকে ধরে এনে গায়েবি মামলায় বিএনপিসহ বিরোধী মতের নেতাকর্মী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে সাজা দিয়ে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত এবং তাদের কণ্ঠ স্তব্ধ করার লক্ষ্যে সাক্ষ্য প্রদান করার সব কৌশল গ্রহণ করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামীতে দেশে কি হবে সেটা সম্পূর্ণ সরকারের ওপর নির্ভর করছে। সরকার যদি চায় সব দল মিলে একটি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে, তবে তাই হবে। আর তারা যদি চায় একতরফা নির্বাচন তাহলে তো সংঘাত হতে পারে। তবে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আনন্দবাজার পত্রিকায় যে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে আমাদের কাছে সেটার কোনো সত্যতা নেই। কোনো বিশ্বাসযোগ্য সোর্স নেই।