সংস্কারের অভাবে চালু হচ্ছে না শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া (আইআইসিটি) ভবনের ক্যাফেটেরিয়া। ফলে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে উচ্চ দামে খাবার খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরকে। এতে খাবার নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ ভবনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে এ ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রয়েছে। যদিও তা অস্বীকার করেছেন আইআইসিটির পরিচালক অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম।
জানা যায়, গত রমজানের ছুটি (এপ্রিল মাস) থেকেই বন্ধ রয়েছে আইআইসিটি ভবনের এ ক্যাফেটেরিয়া। এ ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ ও সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের প্রায় ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করেন। ভবনটি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া দূরে হওয়ায় আইআইসিটি ক্যাফেটেরিয়ার উপর নির্ভর এ ভবনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বর্তমানে ক্যাফেরিয়াটি বন্ধ থাকায় সেখানেও যেতে পারছেন না তারা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক কাছে থাকায় বাইরে গিয়ে উচ্চ দামে খাবার খাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অনির্বান রায় বলেন, ‘ক্যাফেটেরিয়াটি বন্ধ থাকায় আমাদেরকে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় যেতে হয় অথবা বাইরে গিয়ে খাবার খেতে হয়। কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া এখান থেকে অনেক দূরে হওয়ায় সময় বাঁচাতে গিয়ে অনেকে সেখানে যেতে চান না। যার কারণে বাধ্য হয়ে উচ্চ দামে গেইটের বাইরে গিয়ে খাবার খেতে হচ্ছে।’
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিরোধী আন্দোলনের আগে থেকে ক্যাফেরিয়া পরিচালনা করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সজল কুণ্ড। গত ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন। সেই সময় পুলিশের ছিটা গুলিতে তার শরীরে প্রায় ৮৩টি স্প্লিন্টার ঢুকে। যা এখনো শরীরে বহন করছেন তিনি। ‘উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ নেওয়ায় তার কাছে থেকে ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে’ এমন অভিযোগ এনে ‘দায়িত্ব ফিরে পেতে’ গত রোববার থেকে প্রতিদিন তিন ঘণ্টা করে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনের সড়কের পাশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তিনি।
তার অভিযোগ, ‘উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার কাছ থেকে ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্ব কেড়ে নিয়েছে। তার রুটি রোজগার বন্ধ করে দিয়ে পেটে লাথি মেরেছে।’
সজল বলেন, ‘আমার কাছ থেকে কৌশলে ক্যাফেটেরিয়ার চাবি নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে আমি যতবার চাবির জন্য গিয়েছি, আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ‘দর বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে’ বারবার এমন কথা বলে ক্যাফেটেরিয়াটি বন্ধ করে রাখছে প্রশাসন। তবে এখনো দর বিজ্ঞপ্তি দেয় নি কর্তৃপক্ষ।’
তবে সজলের অভিযোগের কথা অস্বীকার করে আইআইসিটির পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ক্যাফেটেরিয়ার ওয়াশরুম নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু নতুন চেয়ার, টেবিল ক্রয় করতে হবে। এছাড়া আরো কিছু জিনিস সংস্কার করতে হবে। সংস্কারের পর ক্যাফেরিয়াটি চালু করা হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বাজেট অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।’