সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রুতি সিলেট’র ‘শ্রুতি সম্মাননা ১৪৩০’ পাচ্ছেন বাউল আবদুর রহমান।
সিলেটের বিস্তীর্ণ ভাটি অঞ্চলের উদাস আকাশের নিচে লিলুয়া বাতাসে রাধা রমণ, হাছন রাজা, উকিল মুন্সি, শাহ আবদুল করিমসহ অজস্র বাউলসাধকের।
যুগ যুগ ধরে তারা বাঙ্গালি চিন্তা-চেতনা, দর্শন শিল্পের সঙ্গে সময়ের যোগ ঘটিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আবদুর রহমান একজন। সাম্প্রতিক সময়ে বাউল জগতের এক অনন্য নাম।
জন্ম হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা গ্রামে ১৩৬৩ বাংলার চৈত্র মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার। শৈশবেই ভাটির অপরূপ যৌবন দেখে প্রেমে পড়েন। সুর জাগে তাঁর মনে। ঢেউ ওঠে পুরো শরীরে।
শৈশবের ঘোর লাগা ভাব যৌবনে পরিণত বয়সে প্রকাশ পায়। শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের কাছে। ৩৪ বছর শাহ আবদুল করিমের সঙ্গে সঙ্গী হয়ে চষে বেড়িয়েছেন বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে। আবদুর রহমান হয়ে ওঠেন নেশায়-পেশায় পুরোদস্তর এক বাউল।
বাংলদেশ টেলিভিশন, বেতারের একজন তালিকাভুক্ত গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী তিনি। প্রায় পাঁচ শতাধিক গান রচনা করার পাশাপাশি সুরও করেছেন। বর্তমানে সময়ে অনেক বাউলশিল্পী যখন দর্শক মাতানোর জন্য সস্তা জনপ্রিয় হওয়ার জন্য গানকে রিমিক্স করেন সেখানে আবদুর রহমান ব্যতিক্রম।
ঝাঁকড়া বাবরি চুলের দীর্ঘাকৃতি এ বাউলের কণ্ঠের মায়াবী জাদুতে বিমোহিত হন সকলেই। আবদুর রহমানের সৃষ্টিকর্ম বর্তমান বাউল সাহিত্যের এক ভিন্নতর সংযোজন যা আমাদের চিন্তা ও চেতনার খোরাক জোগায়।
শ্রুতি সিলেট প্রতিবছর বাংলা নববর্ষের দিন একজন গুণীজনকে সম্মাননা জানায়।
বিগত বছর গুলোতে শ্রুতি সম্মাননা পেয়েছেন ভবতোষ চৌধুরী, কবি তুষার কর, উস্তাদ করিম শাহাব উদ্দিন, চন্দ্রাবতী রায় বর্মণ, অরবিন্দ দাশগুপ্ত, ড.সুরেষ রঞ্জন বসাক, প্রমোদ দত্ত, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ড. মকবুল হোসেন, ব্যারিস্টার মো: আরশ আলী, শাহীন আখতার, রূপা চক্রবর্তী, নীলোৎপল সাধ্য, সুজিত মুস্তাফা , সালাউদ্দিন আহমেদ, হেলাল হাফিজ, ডালিয়া আহমেদ, শারমিন সাথী ইসলাম ময়না।