গত দুই বছরের মতো এবারও কোরবানির পশু বেচাকেনায় ডিজিটাল হাটের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। করোনা সংক্রমণ বাড়ার কারণে জনসমাগম এড়াতে ও ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার্থে সরকারের আইসিটি বিভাগ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ডিজিটাল হাটকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছে।
ডিজিটাল হাটের গত দুই বছর অভিজ্ঞতা ও ডিজিটাল হাটের প্রতি ক্রেতা-বিক্রেতাদের আগ্রহ দেখে এবারও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ডিজিটাল কোরবানির হাটের মাধ্যমে সেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবে।
গতবারের মতো এবারও সরকারের এটুআই প্রকল্পের একশপ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ) এবং ই-ক্যাব ডিজিটাল হাটের অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।
কোরবানির পশু বিক্রির জন্য দেশে প্রথম ডিজিটাল হাট শুরু হয় ২০২০ সালে। গত বছরও ডিজিটাল হাটে পশু কেনা-বেচা হয়। ক্রেতাদেরও বেশ সাড়া পাওয়া যায়।
এবারও ডিজিটাল হাট বসছে। আগামী রোববার (৩ জুলাই) এবারের ডিজিটাল হাটের উদ্বোধন হবে। উদ্বোধনের পর যে কেউ আইসিটি বিভাগ পরিচালিত ‘digitalhaat.gov.bd’ ওয়েবসাইট থেকে কেনা-বেচা করতে পারবেন। আর বিক্রেতাদের স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ডিজিটাল হাটে তালিকাভুক্ত হতে হবে।
এবারের ডিজিটাল হাটে ই-ক্যাব ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন অনুমোদিত খামারিরা পশু বিক্রি করতে পারবেন। এ ছাড়া স্থানীয় জেলা প্রশাসনের অনুমোদিত বিক্রেতারাও পশু বিক্রি করতে পারবেন।
ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, গতবছর ই-ক্যাব ডিজিটাল হাট পরিচালনা করলেও এবার আইসিটি বিভাগ পরিচালনা করছে। আমরাও যৌথভাবে যুক্ত আছি।
জানা যায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সারাদেশের প্রান্তিক খামারিদের এ প্লাটফর্মের সঙ্গে সংযুক্ত করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এ নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পক্ষ থেকে আইসিটি বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিজিটাল হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা শুরুর প্রথম বছরেই বেশ সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো পরিচালিত ডিজিটাল হাটে বিক্রি হয়েছিল ২৭ হাজার পশু। গত বছর বিক্রি হয় ৩ লাখ ৮৭ হাজার পশু। এটাকে খুবই ইতিবাচকভাবে দেখছেন ডিজিটাল হাটের উদ্যোক্তা, ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
ডিজিটাল হাটের ওয়েবসাইটে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৭০টি পশু খামারের খামারিরা যুক্ত হয়েছেন। গরু, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, উট ও মহিষকে প্রাণীর ক্যাটাগরি হিসেবে ওয়েবসাইটে রাখা হয়েছে। ওয়েবসাইটে গ্রাহকের অভিযোগ জানানোরও ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া আছে অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমের সুবিধা।
অনলাইন হাট থেকে পশু কিনে নিয়ে যাওয়া একটি বিরাট সমস্যা। কিন্তু ডিজিটাল হাটের উদ্যোগে পশু শিপমেন্টের ব্যবস্থাও রয়েছে। মাংস প্রসেসিং করার জন্য রয়েছে কসাইয়ের ব্যবস্থাও।
জানা যায়, আগামী রোববার (৩ জুলাই) সারাদেশের ৬৪টি জেলায় একযোগে উদ্বোধন হবে ডিজিটাল হাট। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ভার্চুয়ালি এ হাটের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, এটুআই প্রকল্প ও ই-ক্যাব প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।