সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন দক্ষিণের (ধলার বন) হাওরে পানি শুকিয়ে মৎস্য নিধন করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার পাগলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে কয়েক’শ কৃষকের অংশগ্রহণে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তব্য দেন, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার, ইউপি সদস্য ফজলু হাসান, ইউপি সদস্য রঞ্জিত সুত্রধর, সাবেক ইউপি সদস্য ধীরেন্দ্র পাল, হিরেশ পাল, ইউপি সদস্য নৃপেশ দে, সজিব আহমদ, গণেশ সুত্রধর, শাফিক মিয়া, কেশব দেব, জিতেন্দ্র নাথ প্রমুখ।
তারা ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের আইয়ুব উদ্দিন বুদ্ধি, আফিজুর রহমান, নুরুল ইসলাম (সুলুক মিয়া) ও কাচা মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, কৃষকদের অনুরোধকে পাত্তা না দিয়ে তারা প্রভাব খাটিয়ে কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষা করে বেআইনিভাবে ধলার বনের পানি শুকিয়ে মৎস্য নিধন করেন। এতে শত্রুমর্দন ধলার বন খ্যাত হাওরের ১৫০০ একর আবাদি বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে হাওরের সহস্রাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এদিকে বিক্ষোভের খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সকিনা বেগম ও থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় সহকারী কমিশনারের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি, ফসলের ক্ষতি রোধে নদী থেকে পানি সেঁচের ব্যবস্থাসহ কয়েক দফা দাবি উত্থাপন করেন বিক্ষোভকারীরা। দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষোভকারী কৃষকরা।
কৃষকদের দাবি মেনে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে তিনদিনের মধ্যে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দেন উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সকিনা বেগম। এজন্য কৃষকদের সহযোগিতা চান তিনি।
এর আগে ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের আইয়ুব উদ্দিন বুদ্ধি, আফিজুর রহমান, নুরুল ইসলাম (সুলুক মিয়া) ও কাচা মিয়ার নাম উল্লেখ করে স্থানীয় সাংসদ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। কৃষকদের অভিযোগ আমলে নিয়ে সরেজমিনে ঘটনার তদন্ত শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমেদ।
অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদনে তিনি জানান, সুনির্ধারিত পরিকল্পনা ছাড়া পানি শুকিয়ে মাছ ধরার ফলে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর হাওরের পানি হ্রাস পেয়েছে। এতে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ ও উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পার্শ্ববর্তী মহাসিং নদী থেকে সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি সরবরাহের মাধ্যমে এই সংকট নিরসন করা যাবে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।