তীব্র কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় জেঁকে বসেছে শীত। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকাল গড়িয়ে এলেও সূর্যের দেখা মিলেনি। কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন শিশু-বৃদ্ধসহ কর্মমুখী মানুষরা।
তীব্র শীতের কারণে বিপাকে পড়েছেন রিকশাচালক, কৃষক, দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষরা। হাড়কাঁপানো শীতের কারণে পর্যাপ্ত সময় কাজ করতে না পারায় উপার্জনে ভাটা পড়েছে তাদের। ফলে পরিবারের ভরণপোষণে হিমশিম খেতে হচ্ছে শ্রমজীবি এসব মানুষদের।
শীতে বোরো জমি প্রস্তুত করতে থাকা গৃহস্থ ও কৃষি শ্রমিকরাও পোহাচ্ছেন চরম দুর্ভোগ। বরফের মত ঠান্ডা পানি ও কাঁদায় কাজ করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন। অতি কষ্টে চারা রোপণ করে বিকাল গড়ালেই ঘরমুখো হচ্ছেন তারা।
শীতের প্রকোপ বাড়ায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন ছিন্নমূল মানুষেরা। শীত নিবারণে শীতবস্ত্র বা কম্বল কেনার সামর্থ না থাকায় চরম দুর্ভোগে রাত্রিযাপন করছেন তারা। এতে বাড়ছে ঠান্ডা জড়িত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এসব পরিবারের মানুষরা। তাদের এই দুর্ভোগ লাঘব করতে সরকারী-বেসরকারীভাবে শীতবস্ত্র সহায়তার দাবি তাদের।
আবুল কালাম নামের পাগলা বাজারের এক রিকশাচালক বলেন, ‘রিকশা চালানোর সময় ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হওয়ার উপক্রম হয়। বাতাসে নাক-চোখ দিয়ে পানি পড়ে। শরীর না মানলেও পেটের টানে যত সময় পারা যায় রিকশা চালাই। অল্প উপার্জন দিয়ে টেনেটুনে সংসার চালাতে হচ্ছে।’
চন্দ্রপুর গ্রামের স্বামী-পুত্রহীন রহিমা বেগম বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে শীত বেড়ে গেছে। আমাদেরও কষ্টের শেষ নেই। শীত নিবারণের মত শীতবস্ত্র নেই, এবছর কোন সহায়তাও পাইনি। সরকার, জনপ্রতিনিধি, সমাজের বৃত্তবানদের সহযোগিতা চাই।’
দরগাপাশার কৃষক শ্যামল চৌধুরী বলেন, ‘বোরো ফসল রোপণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় ১৪ একর জমিতে ফসল রোপন করবো এবছর। কিন্তু শীত বাড়ায় বিপাকে পড়েছি। শীতের কারণে শ্রমিক পেতে কষ্ট হয়।’
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহা বলেন, ‘ছিন্নমূল হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণের জন্য ২ হাজার কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি। ইতিমধ্যে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ১শ’ ৫০ টি করে কম্বল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট কম্বল উপজেলা প্রশাসন থেকে বিতরণ করা হবে।’