চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের লালচাঁন্দ গ্রামে চলাচলের রাস্তার প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) বেলা ১২টায় চুনারুঘাট উপজেলার লালচাঁন্দ গ্রামে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সালাম সর্দার, ইদ্রিস আলী, আব্দুর রেজাক, আব্দুস শহিদ, আমর চাঁন, আম্বিয়া খাতুন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ‘এটি আমাদের পূর্বপুরুষের আমলের রাস্তা। শতাধিক বছর ধরে এই রাস্তা দিয়ে আমরা সহ গ্রামের অসংখ্য মানুষ চলাফেরা করে আসছি। সম্প্রতি একই গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুল মন্নান ও তার ভাইয়েরা সেই রাস্তা বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। এ নিয়ে একাধিক সালিশ বৈঠক হলেও তারা তা অমান্য করে আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এমতাবস্থায় আমাদের বাচ্চারা স্কুল ও মাদ্রাসায় লেখাপড়ার জন্য যেতে পারছে না। বাড়ির বাকি সদস্যরাও বাহিরে যেতে পারছে না। এতে আমরা ৭০ টি পরিবারের প্রায় ২ শতাধিক মানুষ চরম দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি।’
এ বিষয়ে সরেজমিনে আব্দুল মন্নানের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী নুরবানু বলেন, ‘এটি আমাদের কাগজের জায়গা। আমার স্বামীর অনুমতি ছাড়া এর বেশি কিছু বলতে পারবো না।’
এ ব্যাপারে শানখলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এদিকে সুন্দর একটি চলাচলের রাস্তা ছিলো। সম্প্রতি একটি পক্ষ রাস্তাটি কেটে ও বেড়া দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে ওই এলাকার বাসিন্দারা চরম বেকায়দায় পড়েছে। স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। আমরা একাধিকবার এটি মিমাংসার চেষ্টা করেছি, কিন্তু অপরপক্ষ তা অমান্য করে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। এই সমস্যা সমাধানে আমার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
উল্লেখ্য, শানখলা ইউনিয়নের লালচাঁন্দ গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুল মন্নানের সাথে রাস্তা নিয়ে বিরোধ বাঁধে এলাকাবাসির। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সালিশ বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। শানখলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান তরফদার সবুজ এক শালীর বৈঠকের মাধ্যমে ৭০টি পরিবারের চলাচলের জন্য ছয় ফুট রাস্তা নির্ধারণ করে দেন। পরবর্তীতে প্রভাবশালী ওই চক্রটি সালিশের সিদ্ধান্ত ডিঙ্গিয়ে চলাচলের রাস্তায় বাধা প্রদান করে। এক পর্যায়ে রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিলে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মাহফুজুর রহমান ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য কুতুব চাঁন এর উপস্থিতিতে ওই বেড়া অপসারণ করেন এবং পরবর্তীতে একই কাজ পুনরায় না করতে অনুরোধ করেন। এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রভাবশালীরা আবারও বেড়া দিয়ে দেয়। এতে ৭০টি পরিবারের প্রায় ২০০ জন সদস্য একেবারেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গত ৬ জুন হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।