শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলো বাংলাদেশ দল। দলের ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবালের বাদ পড়া আর পায়ের চোটের কারণে নিয়মিত অধিনায়ক সাবিক আল হাসানের অনুপস্থিতিতেও দারুণ লড়ছে টাইগাররা। শ্রীলঙ্কার দেয়া ২৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস আর তানজিদ তামিমের অর্ধশতকে জয়ের পথে টাইগাররা।
আসামের গুয়াহাটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে বেশ চড়াও ছিলেন লঙ্কান ব্যাটাররা। পরে শেখ মেহেদী-মিরাজদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম ইনিংস শেষে ৯ উইকেটে ২৬৩ রান করে দাসুন শানাকার দল।
দুই ওপেনারের মারমুখী ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৪ ওভারেই দলীয় একশ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায় লঙ্কানরা। রানের গতি দেখে মনে হয়েছিল, অনায়াসে তিনশ পার করবে শানাকার দল। লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল পেরেরা ৯.১ ওভারেই ৬৪ রান তোলেন। এরপর হাতের পেশীতে অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়েন পেরেরা। তার আগে আক্রমণাত্মক মেজাজে এই বাঁ-হাতি ব্যাটার মাত্র ২৪ বলে করেন ৩৪ রান।
এরপর ক্রিজে আসা কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে ওপেনার নিশাঙ্কা জুটি গড়েন ৪০ রানের। মেন্ডিসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম উইকেটের সূচনা করেন নাসুম আহমেদ। নাজমুল হোসেন শান্ত’র হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে এই ডানহাতি ব্যাটার ২০ রান করেন।
অন্যপ্রান্তে থাকা ইনফর্ম ব্যাটার নিশাঙ্কা ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন এরই মধ্যে। শেখ মেহেদীর বলে তারই হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার ব্যাটে আসে ৬৮ রান (৬৪ বল)। তার আউটের পরই নিয়মিত বিরতিতে আরও দুই উইকেট হারায় লঙ্কানরা। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ধারাবাহিক সাদিরা সামারাবিক্রমা এদিন মাত্র ২ রানেই ফিরেন, তিনি মেহেদীর শিকার। টাইগার এই স্পিনারের বলে এরপর চারিথ আসালাঙ্কাও ফেরেন ১৪ রানে। ফলে তাদের রানের চাকা ধীরগতির হয়ে পড়ে।
সর্বশেষ এশিয়া কাপেও রানখরায় ভোগা লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা এদিন মাত্র ৩ রানে শরীফুলের বলে ক্যাচ আউট হয়েছেন। এরপর ইনিংস বড় করার চেষ্টা চালান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও দিমুথ করুণারত্নে। করুণারত্নে (১৮ রান) আউট হতেই ২১৮ রানে ৬ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
এরপর ডি সিলভার অর্ধশতকের সুবাদে আড়াইশ রান পেরোয় তারা। মাঝে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দুটি রান-আউটে বড় অবদান রাখেন। করুণারত্নকে তিনি আউট করেন সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দিয়ে। এরপর আর কোনো লঙ্কান ব্যাটার বলার মতো রান পাননি। পেরেরা আগেই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়ায় ৪৯.১ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস।
বাংলাদেশের হয়ে ৯ ওভারে ৩৪ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদী। সবচেয়ে সাশ্রয়ী বোলিং করা মিরাজ ১০ ওভারে ৩২ রানে নেন এক উইকেট। এছাড়া শরীফুল, নাসুম ও তানজিম সাকিব একটি করে শিকার করেছেন।
শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলেছেন ওপেনার তানজিদ তামিম-লিটন জুটি। ওপেনিং জুটিতে এই দুই ওপেনার তোলেন ১৩১ রান। দুজনেই পেরোন অর্ধশতকের কোটা। ইনিংসের ২১তম ওভারে হেমন্তর বলে পাথিরানার ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন লিটন। এর আগে দশটি বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৬ বলে করেন ৬১ রান। অপর ওপেনার তানজিদ তামিম ৮৮ বলে করেন ৮৪ রান। এতে ১০ বাউন্ডারির সাথে সাথে ২ টি ছক্কাও হাঁকান জুনিয়র তামিম।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২৮ ওভার শেষে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ২ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান। ক্রিজে আছেন মেহেদি হাসান মিরাজ (২৭) ও তাওহীদ হৃদয় (০)।