রাজশাহীতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) কার্যালয়ে এটিএন নিউজের রিপোর্টার ও ক্যামেরাপারসনের ওপর হামলার ঘটনায় সাত জনের নাম উল্লেখ ও ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়েছে। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলাটি করেন এটিএন নিউজের রিপোর্টার বুলবুল হাবিব।
এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ (৫৫), ভান্ডার রক্ষক মো. জীবন (৪২), নির্বাহী পরিচালকের দফতরের পিয়ন সেলিম (৪১), নির্বাহী পরিচালকের পিএ নুরুল ইসলাম (৪৫), আনসার সদস্য এনামুল (৩৫), পিয়ন ফারুক (৪০) ও পরিচালকের গাড়িচালক আব্দুস সবুর (৪২)।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামলায় সাত জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে সোমবার বিকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমডিএর দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সাংবাদিকদের আন্দোলনের মুখে হামলায় জড়িত ভান্ডার রক্ষক মো. জীবন ও পরিচালকের গাড়িচালক আব্দুস সবুরকে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।
বিএমডিএর চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান বলেন, আমরা সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেখানে ভিডিও ফুটেজ দেখে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এরপর দুই জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি তদন্তে কমিটি করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এর সঙ্গে আরও কারা জড়িত তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাজশাহীতে সংবাদ সংগ্রহের সময় এটিএন নিউজের রিপোর্টার বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপারসন রুবেল ইসলামের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর আমবাগান এলাকায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা দুই জনের বরখাস্তের দাবি করেছিলাম। সে দাবি পূরণ হয়েছে। আরও পাঁচ জনের বিষয়ে আমরা জানিয়েছি। তাদেরকে মঙ্গলবারের মধ্যে বদলির দাবি জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। এরপর সাংবাদিকদের আন্দোলন স্থগিত করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সকালে এটিএন নিউজের রিপোর্টার বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপারসন রুবেল ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে আসছেন কিনা, সে সম্পর্কে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশীদ তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এর কিছুক্ষণ পর বুলবুল হাবিব লাইভ সম্প্রচার শুরু করেন। তখন আব্দুর রশীদের নির্দেশে ভান্ডার রক্ষক জীবনের নেতৃত্বে কয়েকজন কর্মচারী দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা করেন। এতে গুরুতর আহত হন ক্যামেরাপারসন রুবেল ও রিপোর্টার বুলবুল। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বুলবুল প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছাড়লেও রুবেল চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রুবেলের কানের পর্দা ফেটে গেছে। কানের ভেতর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।