রিচার্লসন জাদুতে আইকনিক স্টেডিয়ামে ‘হলুদ উৎসব’

এবারের বিশ্বকাপে তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শুরুর ম্যাচে হোঁচট খেয়েছে। এই লুসাইলেই ২ দিন আগে আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে সৌদি আরবের কাছে হেরেছিল। পয়েন্ট না হারিয়ে বসে প্রফেসর তিতের দল; ছিল এমন শঙ্কাও। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে ল্যাটিন আমেরিকার আরেক দেশ ব্রাজিল বেশ দাপুটে জয় তুলে নিল।

কাতারের লুসাইলের আইকনিক স্টেডিয়ামে হলুদ জার্সিধারিদের বেজায় ভিড় ছিল। সবাই মিলেছে একই মোহনায়। উৎসবের আমেজে রাতের কৃত্রিম আলোতে প্রিয় দলের খেলা দেখতে এসে কাউকে নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়নি। মরুর বুকে প্রথম বিশ্বকাপে শুরুর ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে সেলেসাওরা।

প্রথমার্ধে ব্রাজিল আক্রমণ করেও গোল পায়নি। পারেনি লক্ষ্যভেদ করতে। তবে বিরতির পর ভাগ্য খুলে যায়। প্রায় একচেটিয়া খেলে জয় তুলে নিয়েছে হেক্সা মিশনে আসা দলটি। এক রিচার্লিশনের জাদুতে মুগ্ধ সমর্থকরা।

৬২ মিনিটে ডি বক্সের কাছ থেকে রিচার্লিশন বা পায়ের জোরালো শটে জাল কাপান। ৭৩ মিনিটের পায়ের দারুণ কাজে দ্বিতীয় লক্ষ্যভেদ করে সার্বিয়াকে ব্যাকফুটে ফেলে দেন টটেটনহ্যামের এই স্ট্রাইকার। এরপর লাতিন ফুটবলের পসরা আরও মেলে ধরে আক্রমণ কম হয়নি। তবে তা পোস্টের এদিক সেদিক দিয়ে গেলে ব্রাজিলের গোলের সংখ্যা বাড়েনি।

গোলসংখ্যা দুই থেকে আর না বাড়লেও সমর্থকরা বেজায় খুশি। প্রেসবক্স লাগোয়া উঁচু গ্যালারির এক পাশে বাবা তার কয়েক বছর বয়সী মেয়ের সঙ্গে বার বারই হাই ফাইভ করে নিলেন।

লুসাইল স্টেডিয়ামের যে দিকে চোখ পড়ে সেদিকেই হলুদ-সবুজের উপস্থিতি। ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রাজিল সমর্থকদের করতালি-বাদ্যযন্ত্রে মুখরিত লুসাইল। গ্যালারির মতো মাঠেও নেইমাররা ছন্দময়। ছোট পাসে কখনো প্রতিপক্ষের ডিফেন্স ভেদ করছেন আবার কখনো ড্রিবল করে বক্সে ঢুকে যাচ্ছেন তিতের শিষ্যরা।

ব্রাজিলের ছন্দময় ফুটবলে লুসাইলের ৮৮ হাজার দর্শক বুঁদ। এত ছন্দ ও শিল্প শুধু ছিল গোলের হাহাকার। দ্বিতীয়ার্ধে মিলল সেটারও সমাধান। রিচার্লসনের জোড়া গোলে ব্রাজিল বিশ্বকাপের প্রথম জয় তুলে নেয়। প্রথম গোলটি দলীয় বোঝাপড়ার মাধ্যমে আর দ্বিতীয় গোলটি তার দারুণ ব্যাকভলিতে। এই অর্ধে হতে পারতো আর দুই গোল। দুই বার সাইড পোস্ট পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।

ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার তার ঝলক দেখিয়েছেন। বেশ কয়েকবারই ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়েছেন। গোলের দেখা পাননি। তবে সে দুঃখ শেষমেশ তার ছিল বলে মনে হয় না। দল যে তার জয়টা তুলে নিয়েছে ঠিকই!

আসলে হলুদ জার্সিধারিদের মনে আনন্দের ফল্গুধারা বইছিল। কাতার বিশ্বকাপ মিশনে এসে যে শুরুটা দেখার মতোই হয়েছে!